সাভারে খেলার সময় জামেলা (০৩) নামে এক কন্যাশিশুকে তুলে নিয়ে যাওয়া বোরখা পরা নারীকে আটক করেছে পুলিশ। রাতে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীর সহায়তায় তাকে আটক করে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
ওই নারীর নাম পারভীন আক্তার। তিনি টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলার কুচুটি গ্রামের শমশের আলীর মেয়ে। তিনি সাভারের কোর্টবাড়ি এলাকায় ভাড়া থেকে স্থানীয় আল-মুসলিমে চাকরি করতেন।
চুরি যাওয়া শিশু জামেলা রাজবাড়ী জেলার বাসিন্দা। সে তার নানী ও মা শিলা বেগমের সঙ্গে থানা রোড এলাকার মৃত আরব আলীর বাড়িতে ভাড়া থাকত।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী আব্দুস সালাম রুবেল বলেন, রাত ১২টার দিকে খবর পাই ওই শিশু সাভারের নামাবাজারের জব্বর মসজিদ সংলগ্ন এলাকার দুলালের বাড়িতে রয়েছে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে সেখানে গিয়ে জানতে পারি বিকেলে পারভীন ওই শিশুটিকে নিয়ে গেছে। গতকাল থেকে দুলালের বাড়ির ভাড়াটিয়া লিপি বেগমের কাছে ছিল জামেলা। সেখানে পারভীনের পরিবারের সদস্যদের দেখতে পাই।
পরে তাদের কাছ থেকে পারভীনের ফোন নম্বর নিয়ে তাকে ফোন করি এবং বলি জামেলাকে দিলে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। তখন পারভীন তার অবস্থান সম্পর্কে জানান। পরে রাত ১টার দিকে সাভারের কলমা এলাকায় একটি দোকানের সামনে গিয়ে পারভীনসহ ওই শিশুকে দেখতে পাই। পরে সাভার মডেল থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে পারভীনকে আটক করে শিশু জামেলাকে উদ্ধার করা হয়।
চুরি যাওয়া শিশুকে ফিরে পেয়ে মা শিলা বেগম জানান, গতকাল থেকে সাংবাদিক ও পুলিশ ভাইয়েরা অনেক কষ্ট করেছেন। আজ আমি আমার সন্তানকে ফিরে পেয়েছি। এজন্য পুলিশ ও সাংবাদিক ভাইদের ধন্যবাদ জানাই। একইসঙ্গে পারভীনের কঠিন শাস্তির দাবি জানাই। পারভীনের মা বলেছে সে নিজের সন্তান বিক্রি করেছে। কাজেই এ ধরনের ঘটনা সে বারবার ঘটাতে পারে। এজন্য তার উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিৎ।
পুলিশ জানায়, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কলমা এলাকায় সাভার মডেল থানার ওসি কাজী মাইনুল ইসলামসহ পুলিশের একটি টিম যায়। সেখানে গিয়ে চুরি যাওয়া শিশু জামেলাকে উদ্ধার করে পারভীনকে আটক করা হয়। কেন তাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গেছেন এমন কোনো তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম বলেন, চুরি যাওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। একইসঙ্গে পারভীনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
ভুক্তভোগী শিলা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রায় ৪ বছর ধরে আমার স্বামী আমাকে ভরণপোষণ দেয় না। আমি ১০ বছর আগে রাজবাড়ী থেকে সাভারে আসি। এখানেই স্বামীসহ থাকতাম। স্বামী আমাকে রেখে চলে গেছে। আমি মানুষের বাসায় কাজ করে মেয়েটাকে দেখাশোনা করি ও সংসার চালাই। গতকাল আমি কাজে গেলে দুপুর ১২ টার দিকে আমার মেয়ে রাস্তায় বের হয়। এসময় একজন বোরকা পরা নারী তাকে তুলে নিয়ে চলে যায়। বিষয়টি আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখে নিশ্চিত হই। গতকাল থেকে খোঁজা-খুঁজির পর না পেয়ে থানায় মামলা দায়ের করি।