বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য দিন দিন অনিরাপদ হয়ে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। স্বাধীনতার আগে শেতাঙ্গদের বর্ণবাদের শিকার কৃষ্ণাঙ্গরা স্বাধীনতার ২৭ বছর পর এসে নিজেরাই বর্ণবাদী হয়ে উঠেছে এবং জড়িয়ে পড়েছে লুটপাটসহ অসংখ্য অপকর্মে।
বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের বর্ণবাদের শিকার হয়ে আসছে দেশটিতে বসবাসকারী অভিবাসীরা। বর্তমানে দেশটির কৃষ্ণাঙ্গরা এত বেশি হিংস্র এবং বর্ণবাদী হয়ে উঠেছে; যা অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্তমানে দুই লাখ বাংলাদেশি নাগরিক ব্যবসা বাণিজ্য করে বসবাস করেন। গত কিছু দিন থেকে কৃষ্ণাঙ্গদের হামলা এবং লুটপাটের শিকার হয়ে আসছেন এসব বাংলাদেশিরা। দেশটির নয় প্রদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী এসব বাংলাদেশি প্রতিদিন কৃষ্ণাঙ্গ কর্তৃক হামলা এবং লুটপাটের শিকার হয়ে আসছেন।
গত মে মাসে দেশটির ফ্রি-স্টেইট প্রদেশের ব্লুমফন্টেইনে কৃষ্ণাঙ্গদের হামলা ও লুটপাটের শিকার হয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারিয়েছে ৭ হাজার বাংলাদেশি নাগরিক। ওই সময় কৃষ্ণাঙ্গরা লুটে নিয়েছে বাংলাদেশিদের কয়েক কোটি টাকার মালামাল। এর পরপরই পুরো দেশে হামলা ছড়িয়ে পড়ে। মে মাসে শুরু হওয়া কৃষ্ণাঙ্গদের লুটপাট ধারাবাহিকভাবে চলছে আজও পর্যন্ত।
দেশটির নর্থ ওয়েস্ট, জোহানসবার্গ, পুমালাঙ্গা, ইস্টার্ন কেপসহ বেশ কিছু প্রদেশে এখনো হামলা এবং লুটপাট চলছে। আজ শুক্রবার পর্যন্ত জোহানসবার্গের সয়েটোসহ বেশ কিছু এলাকায় কৃষ্ণাঙ্গরা লুটে নিয়েছে অসংখ্য অভিবাসীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। লুটপাটের পাশাপাশি কৃষ্ণাঙ্গরা এখন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বিদেশি নাগরিকদের বের করে দেয়ার দাবি তুলেছে তাদের সরকারের কাছে৷ কৃষ্ণাঙ্গদের দাবি বিদেশিরা তাদের কর্মসংস্থান দখল করে নিয়েছে। বিদেশিদের তাড়িয়ে স্থানীয় নাগরিকদের কর্মসংস্থান তৈরির দাবি জানাচ্ছে কৃষ্ণাঙ্গরা।
অপরাধপ্রবণ দক্ষিণ আফ্রিকায় বরাবরের মতো অসহায় অবস্থায় দিনাতিপাত করে বাংলাদেশিরা। এসব বাংলাদেশির যেন কোনো অভিভাবক নেই কোথাও। অবৈধভাবে দেশ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমানো এসব বাংলাদেশিদের কোনো দায়িত্ব নেয় না, সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এমনকি দেশটিতে থাকা বাংলাদেশ হাইকমিশনও।
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বছরে বৈধপথে কয়েকশ’ কোটি টাকা রেমিটেন্স দেশে গেলেও দুই লাখ প্রবাসীদের সুখ-দু:খ দেখার যেন কেউ নাই। নামমাত্র বাংলাদেশ হাইকমিশন থাকলেও প্রবাসীদের কোনো কাজে আসে না এই হাইকমিশন। দেশটিতে প্রবাসীদের স্বার্থ, সুবিধা-অসুবিধা দেখভাল করার কথা বলে গজিয়ে ওঠা কমিউনিটি সংগঠনগুলোর অবস্থা আরও নাজুক। এ সংগঠনগুলো বাংলাদেশিদের সুখ-দু:খকে পুঁজি করে উল্টো চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িত হয়ে পড়ার অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে।