মানুষের মনের কথা পড়তে পারার কঠিন কাজটাও পানির মতো সহজ করে ফেলেছেন বিজ্ঞানীরা।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন বিজ্ঞানী গবেষণা করে এমন একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন, যার সামনে পক্ষাঘাতগ্রস্ত বা বোবা মানুষকে বসিয়ে পর্যবেক্ষণ করলে তার মনের কথা ভেসে উঠবে কম্পিউটারের পর্দায়। বুধবার এমন দাবিই করেছেন তারা। গার্ডিয়ান।

গবেষকরা বলছেন, মানুষের মস্তিষ্কের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে এই যন্ত্র ব্যবহার করে তাদের ভাবনা জানা সম্ভব। তাদের মতে, গাণিতিক সূত্র ও কম্পিউটার প্রোগ্রামের মাধ্যমে মস্তিষ্কের কার্যকলাপকে শব্দে রূপান্তর করা সম্ভব।

মনের ভাষা বুঝতে সক্ষম একটি যন্ত্রের নকশাও তৈরি করেছেন ওই গবেষকরা। ওই যন্ত্র এবং সহায়ক কম্পিউটার প্রোগ্রাম একসঙ্গে মস্তিষ্কের চিন্তাভাবনাকে রূপান্তর করে কিছু ধ্বনি ও শব্দে প্রকাশ করবে। তবে পুরো বিষয়টি এখনো পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের পর্যায়ে রয়েছে। গবেষক দলের প্রধান ডাক্তার এডওয়ার্ড চ্যাঙ জানিয়েছেন, তাদের আবিষ্কৃত ডিভাইসটির নাম ‘স্পিচ নিউরোপ্রস্থেটিক’।

এই ডিভাইসটি মানুষের মস্তিষ্কের ডিকোডগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে ভোকাল ট্র্যাক্ট, ঠোঁট, চোয়াল, জিহ্বা এবং উপজিহ্বার ক্ষুদ্র পেশিগুলোর নড়াচড়া পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণগুলোকে চিহ্নিত করবে।

আবিষ্কৃত ডিভাইসটি পরীক্ষার জন্য ৩০ বছর বয়সী এক স্বেচ্ছাসেবী যুবকের মাথায় স্থাপন করেছিলেন। ১৫ বছর আগে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়া এই যুবকটি কী বলছে বা বলতে চায় এমন প্রায় ৫০টি শব্দ কম্পিউটারে ভেসে উঠল, যেগুলো দিয়ে অন্তত এক হাজার বাক্য তৈরি সম্ভব।

‘পানি’, ‘ভালো’, ‘বিদায়’, ‘গরম’, ‘ঠাণ্ডা’ প্রভৃতি শব্দ ছিল ওই তালিকায়। লোকটিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আজ তুমি কেমন আছ? কম্পিউটার উত্তরে লিখে দিল, আমি ভালো আছি। তিন থেকে চার সেকেন্ডের মধ্যে কম্পিউটারে তার উত্তরগুলো ভেসে আসছিল।