বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইনের প্রতিবাদে ভারতের সর্ববৃহৎ রাজ্য উত্তরপ্রদেশে রোববার লাখ লাখ কৃষক বিক্ষোভ করেছেন। গত নভেম্বরে ভারতীয় পার্লামেন্টে প্রায় বিনা বাধায় এই আইনগুলো পাস হওয়ার পর রাজ্যে রাজ্যে কৃষক অসন্তোষের জন্ম নেয়।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী বিক্ষোভে পাঁচ লক্ষাধিক কৃষক অংশ নেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে এএফপির এক চিত্রগাহক বলছেন, অন্তত ৫০ হাজার কৃষক ও সমর্থক বিক্ষোভে অংশ নেন। বিতর্কিত এসব আইন বাতিলের স্লোগান দিচ্ছিলেন তারা।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার কর্তৃক প্রণীত কৃষি আইনের প্রতিবাদে গত বছরের নভেম্বরে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর এত বড় আকারের বিক্ষোভ আগে হয়নি বলে বর্ণনা করেছেন উত্তরপ্রদেশের এই কৃষক বিক্ষোভের আয়োজকরা।
গত কয়েকদিন ধরে উত্তরপ্রদেশের অন্যতম বৃহৎ শহর মুজাফফরনগরে বাস ও ট্রাক্টরসহ নানান যানবহনে করে আসতে থাকেন দলে দলে কৃষক। এতে করে উত্তরপ্রদেশের স্থানীয় প্রশাসন গোটা রাজ্যে নিরাপত্তা ব্যাপক জোরদার করে।
আজ রোববার লাখো বিক্ষুব্ধ কৃষক পতাকা উড়িয়ে মুজাফফরনগরের সব রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। বারো মাইলের দীর্ঘ এক সড়ক অবরোধ করেন তারা। বিক্ষোভরত কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে এ সময় টহল দিচ্ছিল কয়েক হাজার পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তা।
দেশটির সরকার বলছে, সংস্কার করা এসব আইনের মাধ্যমে বেসরকারি খাত কৃষিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখার সুযোগ পাবে। এসব আইন কৃষকদেরকে তাদের পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে আরও স্বাধীনতা দেবে। মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের ভূমিকাকে খর্ব করে চাষীদের নানা সুবিধা দেবে।
কিন্তু কৃষকরা বলছেন, বিভিন্ন কৃষিপণ্যের জন্য তারা যে এতদিন সরকারের বেধে দেওয়া ‘ন্যূনতম সহায়ক মূল্য’ পেতেন তা আর পাবেন না। কৃষকদের পণ্য বিক্রির নিয়ম শিথিল করে সংস্কার করা এসব আইনে বড় বড় করপোরেশনের কাছে বন্দি হয়ে যাবেন তারা।
কৃষিনির্ভর উত্তরপ্রদেশে রোববারের এই বিক্ষোভের আয়োজকরা বলছেন, তারা এই আন্দোলনকে পুনরজ্জীবিত করতে চান। বিক্ষোভরত কৃষকদের নেতা রাকেশ টিকায়েত বলেন, ‘আমরা আমাদের বিক্ষোভ জোরালো করে জানান দিতে চাই মোদি সরকার কৃষকবিরোধী।’
বিতর্কিত কৃষি আইনের প্রতিবাদে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন কৃষকনেতারা। এর আগে রাজধানী দিল্লি ও পাঞ্জাবসহ দেশটির আরও অনেক প্রদেশের লাখো কৃষক দীর্ঘদিন অবস্থান ধর্মঘট করেছেন। আবারও সেই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হল।