ভূকম্পের সময় পৃথিবীর কম্পনের শব্দ শুনতে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা নতুন এক পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে।ওই পদ্ধতিতে পৃথিবীতে ভূকম্পনের ফলে আফটার শকের শব্দ ভূপৃষ্ঠ থেকে ২৪ কিলোমিটার ওপর থেকে শুনতে পেয়েছে নাসার একটি বিশেষ বেলুন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভবিষ্যতে এই শব্দ শুনে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে ভূমিকম্পের কয়েক মুহূর্ত আগে তা আঁচ করা যায় কিনা, তারও চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।

২০১৯-এর ২২ জুলাই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’-এ।

নাসা জানিয়েছে, ২০১৯ সালের ৪ এবং ৬ জুলাই দু’টি শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছিল ক্যালিফোর্নিয়ার রিজক্রেস্টে। সেই ভূকম্পের পর প্রায় ৬ সপ্তাহ ধরে লাগোয়া এলাকায় আফটার শকের ঘটনা ঘটেছিল কম করে ১০ হাজার। সেই কম্পনের শব্দ শোনা সম্ভব কিনা জানতে নাসা এবং ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (‘ক্যালটেক’) যৌথভাবে বিশেষ কয়েকটি যন্ত্রপাতিসহ বেশ কয়েকটি বেলুন উড়িয়েছিল ভৃপৃষ্ঠের ১৮ থেকে ২৪ কিলোমিটার ওপরে। তাতেই প্রথম ধরা পড়ে পৃথিবীর এই শব্দ। ২০১৯-এর ২২ জুলাই।

বেলুনগুলোকে ওড়ানো হয়েছিল সৌরশক্তির সাহায্যে। ওই বেলুনগুলোর মধ্যে রাখা ছিল খুব শক্তিশালী বেশ কয়েকটি ব্যারোমিটার। ভূকম্পনের আফটার শকের ফলে তৈরি হওয়া শব্দতরঙ্গের জন্য লাগোয়া বায়ুমণ্ডলের চাপের রদবদল মেপেই পৃথিবীর সেই শব্দ শোনা গেছে।

নাসা জানিয়েছে, সেই শব্দ অবশ্য মানুষের শ্রবণযোগ্য নয়। তা বিশেষ যন্ত্রেই শুধু ধরা পড়ে।

তবে নাসার পরিকল্পনা, আপাতত এই অভিনব পদ্ধতি ব্যবহার করে অন্যান্য গ্রহের ভেতরে ভূতাত্ত্বিক পরিবর্তনগুলো বোঝা, তাদের চেনা ও জানা। বিশেষ করে, প্রচণ্ড তাপমাত্রার জন্য সূর্যের কাছে থাকা যে সব গ্রহে কোনো মহাকাশযান নামানো সম্ভব নয়। তার মধ্যে অন্যতম পৃথিবীর ‘যমজ বোন’ শুক্রগ্রহ।