ক্যারিবিয়ান সাগর অঞ্চলের দ্বীপ দেশ হাইতিতে ৭ দশমিক ২ মাত্রার তীব্র ভূমিকম্প আঘাত হানার পর দেশটিতে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার সকালে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ কম্পনে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় একাধিক এলাকা।

সেখানকার রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে বাড়িঘর মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংস্তূপে পরিণত হয় বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ধ্বংস্তূপে চাপা পড়ে বহু মানুষের হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আমেরিকান ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্স থেকে ১৫০ কিলোমিটার পশ্চিরে, ভূপৃষ্টে ১০ কিলোমিটার গভীরে।   ভূমিকম্পের পর পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও দীর্ঘ সময় আফটার শক অনুভূত হয় বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এর আগে ২০১০ সালের ৭ মাত্রার একটি তীব্র ভূমিকম্পে দেশটিতে আড়াই লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। সেই ভূমিকম্পের ধকল এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি ক্যারিবীয় অঞ্চলের এই দরিদ্র দেশটি।

কয়েকদিন আগেই দেশটির প্রেসিডেন্ট নিজ বাসভবনে গুলিতে নিহত হওয়ার পর রাজনৈতিকভাবেও দেশটি টালমাটাল অবস্থায়  রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, শনিবার হাইতির পাটি ট্রু দ্য নেভাস শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরে ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে ৭ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়, স্থানটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় দেড়শ কিলোমিটার পশ্চিমে।

এই ভূমিকম্পে বহু হতাহত ও ব্যাপক বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ইউএসজিএস।

ভবনগুলো ধসে পড়তে পারে এমন আশঙ্কায় ওই অঞ্চলের লোকজন বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় বের হয়ে আসেন, ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতাও জারি করা হলেও তা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

১১ বছর আগে হাইতিতে ৭ মাত্রার যে ভূমিকম্প হয়েছিল এবারেরটি তারচেয়ে বড় ও ভূপৃষ্ঠের কম গভীরতায় উৎপত্তি হয়েছে। আগের ভূমকম্পটিতে দেশটিতে হাজার হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছিল, বহু ভবন ধসে পড়ে অনেক লোক গৃহহীন হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের সুনামি সতর্কীকরণ সিস্টেম ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতা জারি করেছিল, কিন্তু কিছুক্ষণ পরই তা তুলে নেয়। তবে সুনামির আশঙ্কায় উপকূলীয় অঞ্চলের কিছু লোক ইতোমধ্যেই পাহাড়ের দিকে পালিয়ে গেছে বলে হাইতির গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে।

হাইতির সিভিল প্রটেকশন সার্ভিস টুইটারে জানিয়েছে, তাদের টিমগুলোর কাছ থেকে সম্ভাব্য হতাহতের ঘটনার প্রাথমিক খবর পাওয়া গেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ছবিতে দেখা গেছে, জেরেমি শহরের নিকটবর্তী কয়েকটি বাড়ি ও একটি গির্জা আংশিক ধসে পড়েছে।