শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ১৬ রান। তা দেননি মেহেদি হাসান মিরাজ। সাবেক অধিনায়কের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে ৭ রানের জয় তুলে নিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
এ জয়ের ফলে খুলনাকে হারিয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
আগে ব্যাটিং পেয়ে চ্যাডউইকের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ভর করে ১৯০ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুড়ে দেয় চট্টগ্রাম।
এতো বড় লক্ষ্য তাড়ায় দারুণ খেলেন খুলনার ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার। অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলীও দেখান তাদের ব্যাটিং শৈলী।
তবে শেষ হাসি ফোটে চট্টগ্রামের খেলোয়াড়দের মুখে।
ফ্লেচারের অপরাজিত ৮০ আর মুশফিক ও ইয়াসিরের যথাক্রমে ৪৩ ও ৪৫ রানের পরও জয় পায়নি খুলনা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৮২ রানে থামে তাদের ইনিংস।
ফলে ৭ রানে জয় পেয়েছে চট্টগ্রাম।
শুরুতে ওপেনার মেহেদী হাসান ও ওয়ানডাউনে নামা সৌম্য সরকারকে যথাক্রমে ২ ও ১ রানে ফিরিয়ে দেন চট্টগ্রামের বোলাররা।
অন্যপ্রান্তে দুর্দান্ত ব্যাট করে যান আন্দ্রে ফ্লেচার। প্রথমে মুশফিক ও পরে ইয়াসিরের সঙ্গে জুটি গড়েন। একটি বাউন্ডারি ও চারটি ছক্কা হাকিয়ে মাত্র ২৯ বলে ৪৩ রান করেন মুশফিক। খুলনার অধিনায়কের ঝড়ো ব্যাটিং থামিয়ে দেন মিরাজই।
মুশফিকের দেখাদেখি ঝড়ো ব্যাট করেন ইয়াসির। শরিফুলের বলে আউট হওয়ার আগে তিনি খেলেন ২৪ বলে ৪৫ রানের ইনিংস। তার ইনিংসে দুটি বাউন্ডারি ও চারটি ছক্কার মার ছিল।
ইয়াসিরের পর মাঠে নেমে আউট হয়ে যান লংকান তারকা থিসারা পেরেরা। তাকে ৩ রানে আটকে দেন মিরাজ।
থিসারা অবশ্য আউট হন ইনিংসের শেষ বলে। তার ওপরেই নির্ভর করছিল দলের জয়-পরাজয়। ইনিংসের শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১৬ রানের।
পপিং ক্রিজে ছিলেন পেরেরা। অন্যপ্রান্তে ৮০ রানে অপরাজিত ফ্লেচার। কিন্তু সেই ওভারে ৮ রানের বেশি দেননি মিরাজ। শেষ বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে কট এন্ড বোল্ড হন থিসারা।
৫৮ বলে ৬ বাউন্ডারি ও ৮ ছক্কার ৮০ রানে অপরাজিত থেকে যান ফ্লেচার।
৪ ওভারে ৪০ রান দিয়ে মিরাজ পেয়েছেন দুটি উইকেট। নাসুম, শরিফুল ও মৃত্যুঞ্জয় পেয়েছেন একটি করে উইকেট।
এর আগে ব্যাট পেয়ে শুরুতে ওপেনার জাকির হাসানকে হারায় চট্টগ্রাম। খালেদ আহমেদের প্রথম ওভারের শেষ বলেই শূন্য রানে আউট হয়ে ফেরেন তিন।
তৃতীয় ওভারে গিয়ে অধিনায়ক আফিফ হোসেনের উইকেট তুলে নেন রুয়েল মিয়া। আফিফ ফেরেন মাত্র ৩ রানে।
এরপর চ্যাডউইককে নিয়ে এগিয়ে যান ওপেন কেনার লুইস। ৩২ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৩৯ রান করে আউট হন তিনি। তার বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে দেন নাবিল সামাদ।
লুইসের আউটের সময় চট্টগ্রামের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ৫২ রান।
সেখান থেকে দলকে ১৮০ এর ঘরে পার করে দেন চ্যাডউইক।
শামীম হোসেন পাটোয়ারী অবশ্য জুটি গড়তে পারেননি চ্যাডউইকের সঙ্গে। ৭ বলে ১০ রান করেন শামীম।
এরপর মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে বড় জুটি গড়েন চ্যাডউইক।
দশ ওভার শেষে চট্টগ্রামের স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে মাত্র ৬৬ রান। সেখান থেকে শেষ ১০ ওভারে আরও ১২৩ রান পায় দলটি। যার মূল কৃতিত্ব চ্যাডউইকের।
মিরাজ ও চ্যাডউইক মিলে মাত্র ৯.৪ ওভারে ১১৫ রানের জুটি গড়েন। যা দলকে এনে দেয় বিশাল সংগ্রহের ভিত।
১৫তম ওভারে রুয়েল মিয়ার চার বলে যথাক্রমে ৪, ৪, ৬ ও ৪ মেরে মাত্র ২৮ বলে নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১৪তম ফিফটি পূরণ করেন চ্যাডউইক।
এরপর খেলা ১৬ বলে আরও ৩৯ রান করেন এ ডানহাতি ব্যাটার। ইনিংসের ১৯তম ওভার শেষে তার ব্যক্তিগত সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮৮ রান। দলের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১৮৯ রান।
খুলনার পক্ষে খালেদ আহমেদ নেন ২ উইকেট। এছাড়া নাবিল সামাদ, রুয়েল মিয়া ও শেখ মেহেদি হাসানের শিকার ১টি করে উইকেট।