লাতিন আমেরিকার স্বাধীন দ্বীপরাষ্ট্র হাইতিতে গেলো দেশের প্রথম কোনও শুটিং ইউনিট! হলো মুক্তি প্রতীক্ষিত ‘নীল মুকুট’ সিনেমার শুটিং।
ঈদের আগেই খবর মিলেছে, কামার আহমাদ সাইমনের ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে আসছে আগস্টে দেশের একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। এবার সেই ছবির শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানালেন এই নির্মাতা- প্রায় ১০০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই ছবির ৬৫ মিনিটই ধারণ করা হয়েছে অর্ধেক পৃথিবী দূরের দেশ হাইতিতে। আর সেই শুটিং করতে গিয়ে একেবারে শেষ মুহূর্ত ইউনিটের কেউ ভিসা না পাওয়ায় তৈরি হয়েছিল দারুণ জটিল পরিস্থিতি!
কামারের ভাষায়, ‘বাংলাদেশ থেকে হাইতি যেতে হলে নিউ ইয়র্ক হয়ে যেতে হবে, সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা থাকাটা জরুরি। আমার আর প্রযোজক সারার সেই ভিসা থাকলেও বাকি ক্রুদের কারও ভিসা ছিল না। এরমধ্যে আবার যাদের নিয়ে শুটিং তারা অনেক আগেই পৌঁছে গেছে হাইতি। আমি যদিও খুব ছোট ইউনিটে কাজ করে অভ্যস্ত, তবু একদম কোনও ক্রু ছাড়া হাইতির মতো এত দূরদেশে গিয়ে শুটিং করার সাহস করাটাই একটা বিরাট যুদ্ধ ছিল।’
আর সেই যুদ্ধে কামারের সঙ্গে ছিলেন প্রযোজক সারা আফরীন। সেই অভিজ্ঞতা জানিয়ে সারা বললেন, ‘প্রায় দুই বছরের অনুমতি জটিলতা কাটিয়ে যখন হাইতিতে শুটিংয়ের সব ঠিক হলো, শেষ মুহূর্তে হলো ভিসা জটিলতা। এর আগে কখনও আমাকে ইকুইপমেন্ট নিয়ে সরাসরি প্রোডাকশনে কাজ করতে হয়নি। কিন্তু হাইতিতে যেহেতু আর কোনও উপায় ছিল না, তখন যা যা করার আমরাই করলাম।’
তবে ঢাকা ছেড়ে হাইতি যাওয়ার আগে মাসখানেক লাইভ সাউন্ড রেকর্ডিং শিখলেন সারা, আর কামার তো সেই ‘শুনতে কি পাও!’ থেকে নিজেই ক্যামেরা চালান। মুম্বাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহকের একটা আন্তর্জাতিক পুরস্কারও আছে তার ঝুলিতে। তারপর প্রস্তুতি নিয়ে কয়েকটা পেলিক্যান সুটকেস ভর্তি শুটিং গিয়ার নিয়ে দু’জন রওনা দিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তারপর সেখান থেকে হাইতি। কিন্তু ‘নীল মুকুট’-এর বিষয় নিয়ে মুখ খুলতে একদম নারাজ কামার। তার মতে, ‘আমি আসলে ছবি বানাই একটা ঘোরের মধ্যে, আমি চাই আমার দর্শকেরাও সেই ঘোরের সাথী হোক- তারাও আবিষ্কার করুক আমার ছবির চরিত্র আর তাদের জীবনের একটা অধ্যায়।’
আগেই কামার জানিয়েছিলেন, বিমানে একটা কান্না অনুসরণ করতে গিয়েই একরকম অপরিকল্পিত সন্তান ‘নীল মুকুট’-এর জন্ম হয়েছে। কোনও উৎসবে পাঠানোর আগে দেশে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েও করোনা পরিস্থিতির কারণে বাতিল করা হয়। এরপর কয়েকবার চেষ্টা করেও ছবিটি মুক্তি দেওয়া সম্ভব হয়নি। অবশেষে ওটিটি প্ল্যাটফর্মেই ভরসা খুঁজলেন নির্মাতা কামার।