নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সেজান জুসের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৮ আসামির মধ্যে ৬ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৪ জুলাই) দুপুরে চারদিনের রিমান্ড শেষে আসামিদের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খাতুনের আদালতে হাজির করলে ছয়জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদের মধ্যে হাসেম ফুডসের মালিক মো. আবুল হাসেমের দুই ছেলে তাওসীব ইব্রাহীম ও তানজীম ইব্রাহীমকে জামিন দিয়েছেন বিচারক। নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক হুমায়ুন কবির জানান, এর আগে গত শনিবার (১০ জুলাই) গ্রেফতার ৮ জনকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খাতুনের আদালতে ৩০২, ৩২৬, ৩২৫, ৩২৩, ৩২৪, ৩০৭ ধারায় হত্যা এবং হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। আদালত প্রত্যেকের ৪ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বুধবার ৪ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে প্রেরণ করা হয় সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আবুল হাসেম (৭০), তার ছেলে হাসীব বিন হাসেম ওরফে সজীব (৩৯), তারেক ইব্রাহীম (৩৫), তাওসীব ইব্রাহীম (৩৩), তানজীম ইব্রাহীম (২১), শাহান শান আজাদ (৪৩), মামুনুর রশিদ (৫৩) ও মো. সালাউদ্দিন (৩০)। এদের মধ্যে জামিন পেয়েছেন আবুল হাসেমের ছেলে তাওসীব ইব্রাহীম ও তানজীম ইব্রাহীম। বাকিদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এদিকে গ্রেফতার ৮ আসামি তাদের অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে রিমান্ডে স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম। বুধবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

পুলিশ সুপার বলেন, এটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। জেলা প্রশাসনের সার্বিক নির্দেশনায় আমরা প্রাথমিকভাবে যাদের এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মনে করেছি তাদের গ্রেফতার করেছি। গ্রেফতার ৮ জনের রিমান্ড আবেদন করেছিলাম। আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। আমরা তাদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আজকে রিমান্ড শেষে আদালতে তোলার পর আদালত তাদের ২ জনের জামিন ও ৬ জনকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের ভবন নির্মাণে অনিয়মসহ বিভিন্ন অনিয়মের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলেও তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। ঘটনাটি তাদের অবহেলায় ঘটেছে এটি তারা স্বীকার করেছেন।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত সেজান জুসের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ডেমরা, কাঞ্চনসহ ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৯ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এ সময়ের মধ্যে ঝরে যায় ৫২ প্রাণ। আহত হন অন্তত ৫০ জন।