টানা তিন মাস বন্ধ থাকার পর আজ থেকে ইকো-ট্যুরিষ্ট (প্রতিবেশ পর্যটক) ও বনজীবীদের জন্য উন্মুক্ত করা হলো সুন্দরবন। একই সাথে শুরু হলো সুন্দরবনের ৯ মাসের পর্যটন মৌসুম। বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের নদ-নদীতে মাছের প্রজনন মৌসুমের কারণে গত পহেলা জুন থেকে ৩১শে আগস্ট পর্যন্ত ৩ মাস ইকো-ট্যুরিজমসহ বনজীবীদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ ছিলো।

এদিকে, বন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালুর পর রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক পথে সুন্দরবনে যাওয়ার সময় মাত্র ৩ ঘন্টায় নেমে আসায় এবারের পর্যটন মৌসুমে সুন্দরবনে দেশী-বিদেশী প্রতিবেশ পর্যটকের আগমন ও রাজস্ব দ্বিগুন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পর্যটকদের ঢল সামাল দিতে ট্যুর অপারেটররা বিলাসবহুলসহ কয়েকশত লঞ্চ, ট্যুরিষ্ট বোটসহ জলযান প্রস্তুত রেখেছে। পাশাপাশি সুন্দরবন উপকূলের জেলে-বনজীবীরা সেরে নিচ্ছেন জাল, নৌকা আর ফিশিং ট্রলারসহ শেষ মূহুর্তের কাজ। আগামী ৩১শে মে পর্যন্ত সুন্দরবনে পর্যটন মৌসুমে ম্যানগ্রোভ এই বনের বন্যপ্রানীদের জীবনাচারে যেন কোন রকম বিরুপ প্রভাব না পড়ে সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে বন বিভাগ জানিয়েছে।

জীববৈচিত্র্যে ভরপুর ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড (বিশ্ব ঐতিহ্য) সুন্দরবন। বিশ্বের সর্ববৃহত জলাভূমি। সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল ও মায়া হরিণ, কুমির, কিং-কোবরাসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রানীর বসবাস। জলভাগে রয়েছে বিশ্ব থেকে হারিয়ে যাওয়া ইরাবতীসহ ৬ প্রজাতির ডলফিন, ২১০ প্রজাতির মাছ। দিনরাত ২৪ ঘন্টায় ৬ বার রূপ বদলানো এই বনে রয়েছে সুন্দরী পশুরসহ শত শত প্রজাতীর গাছপালা। বঙ্গোপসাগর কোলে সুন্দরবনে কটকার জামতলা সী বিচে দেখা যায় সূর্যোদয় ও সূর্যান্ত। এসব প্রান-প্রকৃতির টানে দেশ-বিদেশের প্রতিবেশ পর্যটক ছুটে আসেন সুন্দরবনে। বন বিভাগের তথ্যমতে, এবার সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগে মাছ, কাঁকড়া, মধু, গোলপাতা আহরনসহ জেলে-বাওয়ালীর সাড়ে ৩ হাজার পাস-পারমিট (বিএলসি) থেকে রাজস্ব আয় দ্বিগুন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।