আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের দখলদারিত্ব বিষয়ক অভিযোগের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ছাড়াও এই যুক্তিতর্কে অংশ নিচ্ছে কানাডা, নেদারল্যান্ডস, দক্ষিণ আফ্রিকা, সৌদি আরবসহ মোট এগারোটি দেশ।

বাংলাদেশের প্রতিনিধি রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর দীর্ঘ সময় ধরে চালানো আগ্রাসনকে আত্মরক্ষার নীতির বলে পার পাবার সুযোগ নেই ইসরাইলের।

তিনি আরও বলেন, “ইসরাইলের এমন দখলদারি আচরণ আন্তর্জাতিক আইনের তিনটি মৌলিক নীতির বিরুদ্ধে যায়। আন্তর্জাতিক আইন মোতাবেক, যে কোনো দখল অস্থায়ী হতে হবে। ইসরাইলের দীর্ঘদিন ধরে দখলদারিত্ব এবং ভূখণ্ড অধিগ্রহণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। নিয়ন্ত্রণের অধিকারকে আত্মরক্ষার অধিকার বলে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করাকে বাংলাদেশ সমর্থন করে না।”

আন্তর্জাতিক আইন ও বিশ্বেনেতাদের বারণ কোনকিছুরই তোয়াক্কা করছেনা ইসরায়েল। এমন পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনে দখলদারিত্ব নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে শুরু হয়েছে ঐতিহাসিক শুনানি। এতে অবিলম্বে অবৈধ ইসরায়েলি দখলদারিত্ব বন্ধের দাবি ফিলিস্তিনের।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সমস্যার একমাত্র সমাধান হলো যত দ্রুত সম্ভব অবৈধ ইসরায়েলি দখল বন্ধ করতে হবে। ফিলিস্তিনিদের নিজেদের মতো করে বাঁচার অধিকার আছে। গাজায় বর্তমানে যে গণহত্যা চলছে তা আন্তর্জাতিক মহলের দীর্ঘদিনের নীরবতার ফসল।

১৯৬৭ সালে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। মৌখিকভাবে তাতে রাজি হলেও বাস্তবে নিয়মিতই সীমানা লঙ্ঘন করছে ইসরায়েল অভিযোগ ফিলিস্তিনের আইনজীবীদের। এই দখলদারিত্বকে অবৈধ ঘোষণা করতে আদালতের কাছে আর্জি জানান তারা।

ফিলিস্তিনের আইনজীবী পল রেইচলার বলেন, দুই দেশের মধ্যকার সমস্যার অন্যতম সমাধান হতে পারে এই অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধ করা। তাই আদালতের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে ইসরায়েলি দখলদারিত্বকে অবৈধ ঘোষণা করা হোক।

নেদারল্যান্ডসের হেগে চলা শুনানিতে অংশ নিচ্ছে ৫২ দেশ ও তিনটি প্রতিষ্ঠান। যা চলবে ২৬শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। আটদিন ধরে চলা শুনানিতে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরবে দেশগুলো। আজ বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তি  উপস্থাপন করবে সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়ামসহ বেশ কয়েকটি দেশ।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরায়েলি বসতিগুলোকে অবৈধ বলে মনে করে। শহরটির সবচেয়ে সংবেদনশীল পবিত্র স্থানগুলোর আবাসস্থল পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলের অধিগ্রহণ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়।

২০০৪ সালে আইসিজে বলেছিলেন, পূর্ব জেরুজালেম এবং পশ্চিম তীরের কিছু অংশে ইসরায়েলের বসতি নির্মাণ আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি। এটি অবিলম্বে নির্মাণ বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানালেও দেশটি এ রায় উপেক্ষা করে চলেছে।