ইসরায়েলে ইরানের হামলা ইস্যুতে জরুরি বৈঠক ডেকেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। স্থানীয় সময় রোববার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে হবে এই বৈঠক।

নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকা মাল্টা জানিয়েছে এই তথ্য। এর আগে, নিজ দেশে হামলার পরই নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠক আহ্বানের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করে ইসরায়েল। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতেই ডাকা হয়েছে এই বৈঠক।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) স্থানীয় সময় রাতে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে ইরান। তিন শতাধিক ড্রোন, ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুঁড়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)

সরাসরি ইসরাইলের ভূখন্ডে ইরানের এটাই প্রথম হামলা। তবে এগুলোর বেশিরভাগ আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করার দাবি করেছে ইসরাইল ও আমেরিকা। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। পাল্টা হামলার আশংকায় ইরানও সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে। আজ জরুরি বৈঠক ডেকেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।

ইরানের ছোড়া শত শত ড্রোন আর ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের ভূখন্ডে ছুটে যাওয়ার এই দৃশ্য অভূতপূর্ব হলেও অপ্রত্যাশিত ছিল না। ঘোষণাটা আগেই দিয়ে রেখেছিল ইরান। এপ্রিলের এক তারিখে সিরিয়ার দামেস্কে ইরানে দূতাবাসে ইসরাইলে হামলার পরেই পাল্টা হামলার ঘোষণা দিয়েছিল ইরান।

একদিন আগে আমেরিকা সতর্ক করে বলেছিল- ইরানের হুমকি বাস্তবেই ঘটতে যাচ্ছে। হলোই তাই। ইসরাইলে প্রথমবার সরাসরি সামরিক হামলা করে বসলো ইরান। যার নাম ’অপারেশন ট্রু প্রমিস’। এই হামলার পর ইরান জাতিসংঘকে জানিয়েছে- তারা যুদ্ধ চায় না, তবে তাদেরও আত্মরক্ষার অধিকার আছে। ঘটনা আপাতত এখানেই শেষ বলেও ইরান জাতিসংঘকে জানিয়েছে।

ইরানি হামলার পরপরই ইসরাইলজুড়ে যুদ্ধের সাইরেন বেজে ওঠে, বিকট সব বিস্ফোরণের শব্দও শোনা যায়। মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। আকাশপথ বন্ধ করে দেয় ইসরাইল। একটি মিসাইল ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে একটি সেনা ঘাঁটিতে আঘাত হানে।

তবে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, আমেরিকা ও মিত্রদের সহায়তায় তারা ইরানের ছোড়া প্রায় ৩শ’ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে। ইসরাইলের সীমানায় ঢুকবার আগেই এদের বেশিরভাগ ধ্বংস করা হয় বলে দাবি তেল আবিবের। ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষায় সাহায্য করে আমেরিকা, ব্রিটেন ও জর্ডানের সেনাবাহিনী।

ইরানের হামলার পরপরই ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাথে ফোনে কথা বলে নিরাপত্তার পূর্ণ আশ্বাস দিয়েছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হামলায় নিন্দা জানিয়েছে আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশ ও জাতিসংঘ। ইসরাইলের অনুরোধে নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠক ডেকেছে বিশ্ব সংস্থা।

এ ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা বেড়েছে। রাশিয়া ও চীন সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহবান জানিয়েছে। এই উত্তেজনার মধ্যে হরমুজ প্রণালী থেকে ইসরাইলের একটি কার্গো জাহাজ জব্দ করেছে ইরান। ইসরাইলের পাল্টা হামলার আশংকায় সতর্ক অবস্থায় আছে ইরান। ইসরাইলের আগ্রাসী কর্মকান্ডে সহযোগিতা না করতে আমেরিকাকেও সতর্ক করেছে ইরানি সরকার।