ইউরোপীয় দেশগুলোতে ভ্রমণে শেনজেন ভিসার মতো উপসাগরীয় দেশগুলোতেও ‘জিসিসি গ্রান্ড ট্যুর’ নামে নতুন ভিসা চালু করছে। ফলে এক ভিসায় উপসাগরীয় ছয় দেশ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার, বাহরাইন এবং কুয়েত ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।

পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলো এরই মধ্যে বিভিন্ন প্যাকেজ সাজিয়ে ফেলেছে। যেমন- একটি প্যাকেজে তিন দেশে ভ্রমণ, দুই রাত যাপন ও দর্শনীয় স্থানগুলোতে পরিদর্শনের সুযোগ রয়েছে। এর জন্য খরচ পড়বে চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার দিরহাম বা তার বেশি। গত সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরাতে উপসাগরীয় দেশগুলোর পর্যটন মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনার সময় কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ‘জিসিসি গ্রান্ড ট্যুর’ ভিসা চালু হতে পারে এ বছরের শেষ নাগাদ। এই ভিসায় সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার ও সৌদি আরবে ভ্রমণের সুযোগ থাকবে।

এ ভিসার মাধ্যমে উপসাগরীয় দেশগুলোর পর্যটনের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাবে বলে মনে করেন ট্রাভেল টেকনোলজি কোম্পানি এক্সপেডিয়ার গ্লোবাল মার্কেট ভাইস প্রেসিডেন্ট রেহান আসাদ। খালিজ টাইমসকে তিনি বলেন, ইউরোপ যখন শেনজেন ভিসা চালু করেছিল, তখন সেটি ওই অঞ্চলের পর্যটন খাতকে প্রসারিত করে। বিভিন্ন দেশে মানুষকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে প্রবেশের সুযোগ দেয় শেনজেন ভিসা।

“সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানুষ সৌদি আরব ও ওমান ভ্রমণ করতে পছন্দ করে। বিপরীতে এ দুটো দেশের মানুষ আরব আমিরাত ভ্রমণ করতে ভালোবসে। তাই এই নতুন ভিসা আন্তঃদেশীয় ভ্রমণ ও পর্যটনকে আরো বাড়াবে।” তবে মানুষ কী চায়, তা বুঝতে সমীক্ষা চালানোর কথা বলেছেন মার্কিন কোম্পানি এক্সপেডিয়ার কর্মকর্তা রেহান আসাদ।

তার ভাষ্য, ‘মানুষ জিসিসি সফরে সুবিধা চায়। আমরা দেখেছি, একটি পরিবার কোন দেশে ভ্রমণ করবে, কোন হোটেলে থাকবে, সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ৮-১৪ বছর বয়সী শিশুরা। আমরা এক কোটি মানুষের মধ্যে জরিপ চালিয়েছি। ফলে তাদের চাহিদা অনুযায়ীই প্যাকেজগুলো তৈরি করব। প্যাকেজ হবে এমন, যেখানে হোটেল, গাড়ি ও ভ্রমণ কার্যক্রম যুক্ত থাকবে।’

উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে আরব আমিরাত ও সৌদি আরবকে অগ্রাধিকারে রেখে প্যাকেজ সাজানোর কথা জানিয়েছেন রেহান আসাদ। প্যাকেজগুলো একেবারে বাঁধা ধরা হবে না, বরং সুবিধা বেছে নেয়ার সুযোগ থাকবে। জিসিসির একক ভিসাকে স্বাগত জানিয়ে ভ্রমণ কোম্পানি ‘ট্রাভেজির’ সহযোগী নির্বাহী আনাস আনান বলেন, উপসাগরীয় দেশগুলোর ভ্রমণ ও পর্যটন খাতের জন্য এই ভিসা বিশাল সুযোগ তৈরি করবে।

একজন ব্যক্তির একটি দেশে ভ্রমণ খরচ দেড় হাজার দিরহাম থেকে শুরু করে ভ্রমণ প্যাকেজগুলো সাজানো হবে। এর মধ্যে বিমান ভাড়া ও দর্শনীয় স্থানগুলো পরিদর্শনের সুযোগ থাকবে। মূলত উপসাগরীয় দেশগুলোর ভ্রমণ মৌসুম কিংবা অন্য সাধারণ সময়ের ওপর খরচের বিষয়টি নির্ভর করবে

আনাস বলেন, আরব আমিরাত, কাতার ও সৌদি আরব দুই দিন থাকার জন্য চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার দিরহাম খরচ হতে পারে। এর মধ্যে থাকবে বিমান যাতায়াত, হোটেল এবং এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার খরচ।