নানা নাটকীয়তা পেরিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প আর কমলা হ্যারিসের প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক হয়ে গেলো যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার রাতে। জরিপ বলছে, এই বিতর্কে কমলাই জিতেছেন। সিএনএন এর তাৎক্ষণিক জরিপ বলছে, ৬৩ শতাংশ দর্শক মনে করেন বিতর্কটির স্পষ্ট বিজয়ী কমলা হ্যারিস।

ফিলাডেলফিয়ায় ন্যাশনাল কনস্টিটিউশন সেন্টারে বিতর্কেই আগেই কমলা যে আত্মবিশ্বাসের সাথে মঞ্চে উঠে শক্ত ব্যক্তিত্বের পরিচয় দিয়ে ট্রাম্পকে তার সাথে হাত মেলাতে বাধ্য করেছেন তাতেই বোঝা যাচ্ছিলো তিনি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকতে চান এই বিতর্কে। যে নিয়ন্ত্রণ বহাল ছিলো বিতর্কের শেষ পর্যন্ত।

গোটা বিতর্ক জুড়ে কমলা হ্যারিস যুক্তরাষ্ট্রের একটা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ছবি তুলে ধরাতেই ব্যস্ত ছিলেন। অন্যদিকে, ট্রাম্প তার শক্তিক্ষয় করেছেন বর্তমান সরকারের ব্যর্থতাকে ফুটিয়ে তুলতে। আর দর্শকরা এই নেতিবাচক মনোভাবটাই পছন্দ করেননি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটাই ছিলো এ পর্যন্ত কমলা হ্যারিসের রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে উজ্জ্বল মুহুর্ত।

কমলা নিপুন হাতে আপাতদুষ্টিতে উদ্ধত ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধরাসায়ী করলেও এটা তার ভোটে জেতাকে কোনভাবেই নিশ্চিত করেনি। কারণ,  প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক ভোটারদের উপর আসলে কতটুকু প্রভাব ফেলতে পারলো তা জানতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যায়।

আর বিতর্কে জিতলেই যে ভোটে জেতা যায় না তা ট্রাম্প টের পেয়েছিলেন ২০১৬ সালে। যেমনটি জর্জ ডাব্লিউ বুশ টের পেয়েছিলেন ২০০৪ সালে।

তবে নির্বাচনে বিতর্কের প্রভাব কতটুকু তা এখনই বুঝা না গেলেও এটা বুঝা যাচ্ছে যে বিতর্কের পর বেশিরভাগ মার্কিন ভোটারের কাছাকাছি আসতে পেড়েছেন কমলা।

বিতর্কের পরপরই ফক্স নিউজ কমলাকে বিজয়ী ঘোষণা করে। ফক্স নিউজের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ব্রিট হিউম বলেন, ‘বিতর্ক শুনে মনে হয়েছে, কমলা খুব ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন। সেভাবেই প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তিনি কী বলছেন, তা নিয়ে সচেতন ছিলেন।’

ট্রাম্পের নিজের বক্তব্য ও ব্যগ্রতা এবং হ্যারিসের ধীরস্থির ও সুচিন্তিত মন্তব্য এই বিতর্কের গতিপথ নির্ধারণ করেছে। ট্রাম্পের প্রতিটি দাবিকেই হ্যারিস সুকৌশলে তার বিরুদ্ধেই ব্যবহার করে গেছেন।

প্রথম বিতর্ক শেষ হতেই ৫ নভেম্বরের আগে আরেকটা ‘প্রেসিডেনশিয়াল ডিবেট’ আয়োজনের আহ্বান করেছে ডেমোক্র্যাট পার্টি। এ থেকেই বোঝা যায়, মঙ্গলবারের বিতর্কে হ্যারিসের সাফল্য নিয়ে ডেমোক্র্যাট পার্টি কতটা আত্মবিশ্বাসী।