পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার আর জি কর কাণ্ডে প্রতিবাদ কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত চিকিৎসকরা। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিনিধি দলের দীর্ঘ বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
পাশাপাশি আজ রাজ্যজুড়ে যে স্বাস্থ্য ধর্মঘট কর্মসূচি হওয়ার কথা ছিলো তাও প্রত্যাহার করে নিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে আগামী দিনগুলোয় কর্মসূচি কেমন হবে, সেসব জানাতে আগামী শনিবার আর জি কর হাসপাতালে মহাসমাবেশ করবেন তারা।
রাজ্যের সচিবালয় নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর সঙ্গে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
যদিও চিকিৎসকরা জানান, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। প্রধান যে তিনটি দাবি ছিলো সেগুলোতে মমতা না মানার বিষয়ে অনড় ছিলেন। মূলত নির্যাতিতা নারী চিকিৎসকের বাবা-মা ও সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই তারা অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রোববার রাতে রাজ্য সচিবালয় নবান্নের সভাকক্ষে ১০ দফা দাবি আদায় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর সঙ্গে বৈঠক করেন আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা। নবান্নের সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রী, প্রশাসনিক কর্তাদের সাথে ২ ঘণ্টা যাবত বৈঠক করেন জুনিয়র ডাক্তারদের ১৭ প্রতিনিধি। বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়।
বৈঠকে চিকিৎসকদের দাবি অনুযায়ী স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের অপসারণের বিষয় মেনে নেননি মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, স্বাস্থ্য সচিবের দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত নয়। তিনি অভিযুক্তও নন। যদিও স্বাস্থ্য সচিবের দুর্নীতির বিষয়ে জুনিয়র চিকিৎসকেরা মমতার কাছে তথ্য-প্রমাণ জমা দিয়েছেন।
মতের অমিল দেখা গেছে রাজ্যের সব মেডিকেল কলেজে টাস্কফোর্স নিয়োগ সংক্রান্ত দাবি নিয়েও। তবে মমতা এদিন চিকিৎসকদের ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, আর জি কর হাসপাতালের ভুক্তভোগী ৪৭ জন চিকিৎসক ও কর্মকর্তাকে অধ্যক্ষ বা তদন্ত কমিটির কর্মকর্তাদের শাস্তি দেওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকেরা রাজ্য সরকারকে আদৌ কিছুই জানাননি।
অনশন প্রত্যাহারের বিষয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের নেতা রুমেলিকা কুমার বলেন, ‘সরকারি অনুরোধে নয়, নির্যাতিতা নারী চিকিৎসকের বাবা-মা ও সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই আমরা অনশন প্রত্যাহার করে নিলাম।’
আরেক চিকিৎসক নেতা দেবাশীষ হালদার বলেন, ‘আমরা সাধারণ মানুষের কথা ভেবে অনশন প্রত্যাহার করলাম। আগামী শনিবার আর জি কর হাসপাতালে মহাসমাবেশ করব।’
পশ্চিমবঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু হয় ৫ই অক্টোবর। সব মিলিয়ে ১৪ জন চিকিৎসক অনশনে বসেন। অসুস্থ হলে ছয়জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকি আটজন গতকাল রাত পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে গেছেন কলকাতা ও উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।