ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী নির্মলা মিশ্র মারা গেছেন। শনিবার রাতে  দক্ষিণ কলকাতার চেতলার নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। গত বেশ কয়েক মাস ধরেই বার্ধ্যকজনিত শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছিলেন এই শিল্পী।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। শনিবার রাতে হঠাৎ করেই তার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকদের খবর দেওয়া হয়। চিকিৎসা শুরু হলেও তাকে বাঁচানো যায়নি।

তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই নির্মলা অসুস্থ ছিলেন। চিকিৎসার জন্য গত ৫ বছরে বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তিও হয়েছিলেন। তিনবার হৃদরোগে আক্রান্তও হয়েছেন। তিন-চার দিন আগে অসুস্থতা হঠাৎই বাড়ে। গত বৃহস্পতিবার তার রক্তচাপ বেশ খানিকটা কমে যায়। কিন্তু তিনি আর হাসপাতালে যেতে চাইছিলেন না। শনিবার সকাল থেকে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তার। রাতে তিনি মারা যান।

ভারতে ১৯৩৮ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মজিলপুরে জন্মগ্রহণ করেন নির্মলা মিশ্র। পরে বাবার চাকরির সূত্রে পরিবারের সঙ্গে কলকাতার চেতলায় চলে যান। ছেলেবেলা থেকেই সংগীতের পরিবেশে বেড়ে ওঠা। তাঁর বাবা পণ্ডিত মোহিনী মোহন মিশ্র এবং দাদা মুরারিমোহন মিশ্র বিখ্যাত গায়ক ছিলেন। কাশী সংগীত সমাজ তাঁর বাবাকে পণ্ডিত, সংগীত রত্নসহ একাধিক উপাধিতে ভূষিত করেছিল।

জন্মের পর থেকেই সংগীতের প্রতি অসীম আগ্রহ ছিল তাঁর। কৈশোর বয়স থেকেই দুর্দান্ত গান গাইতেন তিনি। সুরেলা কণ্ঠের জাদুতে তিনি মুগ্ধ করেছেন আপামর বাংলাকে। ‘ও তোতা পাখি রে’, ‘এমন একটি ঝিনুক খুঁজে পেলাম না’ তাঁর জনপ্রিয় গানগুলির মধ্যে অন্যতম। বাংলা আধুনিক গানের ইতিহাসে তিনি সত্যিই এক চিরস্থায়ী নাম।

বাংলা ছবির জন্য প্লে-ব্যাকও গেয়েছেন তিনি, জনপ্রিয় হয়েছে সে গান। ১৯৭৬ সালে উত্তর কুমারের সঙ্গে নব-রূপে তৈরি মহালয়ার প্রভাতী অনুষ্ঠানেও তিনি অংশ নিয়েছিলেন। নির্মলার স্বামী প্রদীপ দাশগুপ্তও ছিলেন একজন শিল্পী ও গীতিকার।