দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় মোখায় রূপ নিয়েছে। এজন্য সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় তাই আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে উপকূলীয় জেলাগুলো।
ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।
সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি এবং সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে।
কোস্ট গার্ড জানায়, ঘূর্ণিঝড় ঘিরে যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা, উদ্ধার কাজ এবং ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে কোস্টগার্ড। কোস্টগার্ডের সব ঘাঁটি, জাহাজ, বোট, স্টেশন, আউটপোস্ট ও ডিজাস্টার রেসপন্স অ্যান্ড রেসকিউ টিম প্রস্তুত রয়েছে।
চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবেলায় সব উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্র, শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি প্রস্তুত রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরুরি সেবার প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ৪১টি ওয়ার্ডে ৯০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের ০২৩-৩৩৩-৬৩০-৭৩৯ জরুরি সেবা নাম্বারে ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য ও সেবা পাবেন চট্টগ্রামবাসী।
কক্সবাজারে ৫৭৬ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের ০১৮৭২৬১৫১৩২ (মোবাইল) অথবা ০৩৪১ ৬২২২২ (টেলিফোন) জরুরি সেবা নাম্বারে ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য ও সেবা পাওয়া যাবে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্থাপিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত খোলা থাকবে।
একইসঙ্গে উপকূলের মানুষকে ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে। ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তাদেরকে নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকার জন্য বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় বাগেরহাট জেলার ৩৪৪ টি আশ্রকেন্দ্র প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১০টি মেডিকেল টিমকে।
এছাড়া, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনাসহ উপকূলীয় সব এলাকার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। মানুষকে সচেতন করতে চলছে প্রচারণা।