জাতীয় সমবায় দিবস আজ। সমবায় সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা এবং সমবায় আন্দোলনে গতিশীলতা আনতে প্রতিবছর নভেম্বর মাসের প্রথম শনিবার দিবসটি দেশব্যাপী উদ্যাপন করা হয়। সে অনুযায়ী আজ ৫১তম জাতীয় সমবায় দিবস।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর দর্শন, সমবায়ে উন্নয়ন’। সমবায় অধিদপ্তর কর্তৃক নির্ধারিত এই প্রতিপাদ্যটি ২০১৯ সাল থেকে একই রাখা হয়েছে। এর আগের বছর ২০১৮ সালের প্রতিপাদ্য ছিল ‘সমবায়ভিত্তিক সমাজ গড়ি, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করি।’
বাংলাদেশে সমবায়ের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ১৯০৪ সালে অর্থাৎ এক’শ আঠেরো বছর আগে। বর্তমানে দেশে প্রায় ১ লাখ ৯৬ হাজার সমবায় সমিতি রয়েছে। এ সব সমবায় সমিতি শেয়ার ও সঞ্চয়ের মাধ্যমে পুঁজিগঠন, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, উৎপাদন, বিপণন প্রভৃতি কার্যক্রমের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নসহ সামগ্রিক আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
যথাযোগ্য মর্যাদায় সমবায় দিবস পালনে বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। সমবায় দিবসের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আজ ভার্চুয়াল উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথকভাবে বাণী দিয়েছেন। এসময় সমবায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান তারা।
বানীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, সমবায় আন্দোলনকে টেকসই রূপ দিতে কৃষি ও অন্যান্য উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগসহ উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণ ও পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করা খুবই জরুরি।
পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তার পাশাপাশি সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে জনমুখী হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাও নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই জাতির পিতার সমবায় ভাবনার আলোকে সকল ধরনের বৈষম্য দূর করে দেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে।
আবদুল হামিদ বলেন, ৫১তম জাতীয় সমবায় দিবস পালনের জন্য নির্ধারিত প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর দর্শন, সমবায়ে উন্নয়ন’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রাম সমবায়ের মাধ্যমে একটি স্বনির্ভর অর্থনীতি গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু সমবায়ের আদর্শে দেশের উৎপাদন ব্যবস্থা তৈরি করে সাধারণ মানুষের স্বনির্ভরতা অর্জনের মাধ্যমে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই সঙ্গে জাতির পিতার অর্থনৈতিক দর্শন ‘সমবায়’ শক্তিকে একটি গণমুখী সমবায় আন্দোলনে পরিণত করতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন ও নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বিপুল সংখ্যক গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ক্ষুদ্র ঋণ, আয়বর্ধনমূলক প্রশিক্ষণ ও উপকরণসহ বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া রাষ্ট্রপতি ৫১তম জাতীয় সমবায় দিবসের সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।
এদিকে, জাতীয় সমবায় দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সমবায় আন্দোলন সব শ্রেণির মানুষের সমতাভিত্তিক উন্নয়ন ঘটিয়ে সরকারের লক্ষ্য পূরণে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা আরও বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সমবায় আন্দোলন সব শ্রেণির মানুষের সমতাভিত্তিক উন্নয়ন ঘটিয়ে সরকারের লক্ষ্য পূরণে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে । তিনি ৫১তম জাতীয় সমবায় দিবস উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করেন। সমবায় আন্দোলন জোরদারের আহবান জানান।