ছয় মাস ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এর মধ্যেই প্রথম শস্যবাহী একটি জাহাজ উইক্রেন থেকে ছেড়ে হিয়ে তুরস্কের বসফরাস প্রণালীতে পৌঁছেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে রদবদল ঘটেছে আন্তর্জাতিক বাজারে। বেড়েছে তেল, শস্যসহ নানান পণ্যের দাম। এরই মাঝে যুদ্ধের ছয় মাসের মাথায় দুই দেশের প্রতিনিধি দলের মধ্যে খাদ্য শস্য নিয়ে চুক্তির পর এই প্রথম শস্যবাহী জাহাজটি তুরস্কের বসফরাস প্রণালীতে পৌঁছেছে এমন খবর প্রকাশ করেছে বিবিসি।

গত ২৪শে ফেব্র“য়ারি রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের পর ইউক্রেনের বন্দরগুলো অবরুদ্ধ ছিল। তবে সম্প্রতি জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় দু’দেশ জাহাজ চলাচল আবারও শুরু করার ব্যাপারে ঐক্যমত্যে পৌঁছায়।

তুরস্ক ও ইউক্রেনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় সময় সোমবার (পহেলা আগস্ট) সকালে ‘রাজোনি’ নামের সিয়েরা লিওনের পতাকাবাহী জাহাজটি ওডেসা থেকে লেবাননের ত্রিপোলি বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। জাহাজটি ২৬ হাজার টন শস্য বহন করছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আরো কিছু জাহাজ যাত্রা করবে বলেও জানিয়েছেন তারা।

জাতিসংঘ ও তুরস্ক আলোচনার মাধ্যমে স্থির করেছে যে সাগরের একটি নিরাপদ করিডোর দিয়ে এই শস্যবাহী জাহাজ চলবে।

কৃষ্ণসাগরে অবরোধ আরোপের কারণে গোটাবিশ্বে যে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা অস্বীকার করছে রাশিয়া। তবে গত মাসে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে নিরাপদে শস্য রপ্তানির সুযোগ তৈরি করার লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আর এতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে জাতিসংঘ এবং তুরস্কও সই করে।

চুক্তির শর্ত বলছে, ইউক্রেন থেকে খাদ্যবাহী কোনো জাহাজে রাশিয়া আক্রমণ করবে না, তবে এসব জাহাজে করে ইউক্রেন যেন অস্ত্র আনা নেওয়া না করতে পারে তা নিশ্চিত করবে তুরস্ক।

ইউক্রেনের সরকার বলছে, ওডেসা ও তার আশপাশের বন্দরগুলোতে আরো ১৬টি জাহাজ ৬০০,০০০ টন খাদ্য শস্য নিয়ে অপেক্ষা করছে। এসব খাদ্যপণ্য আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ যেখানে সংকট রয়েছে সেখানে রপ্তানি করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বলছে, খাদ্যশস্য রপ্তানির দিক থেকে ইউক্রেন বিশ্বের চতুর্থ স্থানে রয়েছে। সানফ্লাওয়ার তেলের ৪২ শতাংশ, ভুট্টার ১৬ শতাংশ এবং গমের ৯ শতাংশ উৎপাদিত হয় দেশটিতে। ইউক্রেনের গম সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হওয়ার প্রথম তিনটি দেশের সারিতে রয়েছে মিশর, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশ।