মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে ৩৮ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘটে ফরিদপুরের সাথে ঢাকাসহ আশপাশের জেলার যোগযোগ অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। শনিবার (১২ই নভেম্বর) সকালে ফরিদপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি এবং কোনো বাস প্রবেশ করেনি। বন্ধ রয়েছে মাদারীপুর, গোপালগঞ্জসহ আশেপাশের পাঁচ জেলায় বাস চলাচলও।
তবে বাস বন্ধ থাকলেও চালু রয়েছে অটোরিক্সা, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেল। যাত্রীদের অভিযোগ, এসব পরিবহনে তিনগুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে যাত্রীদের কাছ থেকে। বাধ্য হয়ে তাদের অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে।
আব্দুল হালিম নামে এক ব্যক্তি বলেন, ঢাকার একটি হাসপাতালে আমার একজন রোগী ভর্তি আছে। এখানে এসে জানতে পারি, বাস চলছে না। তাহলে আমি এখন ঢাকায় যাব কীভাবে ?
মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচল বন্ধের দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ধর্মঘট ডেকেছে জেলা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। মহাসড়কে নৈরাজ্য বন্ধ ও শৃংখলা ফেরানোর দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন বাস মালিক নেতারা।
তবে, বাস ধর্মঘটকে পরিকল্পিত দাবি করেছেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা। শনিবারের গণসমাবেশ পণ্ড করতেই এই ধর্মঘট বলে অভিযোগ তাদের।
বিএনপির নেতারা বলছেন, ফরিদপুরে বিএনপির গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত ও সংকুচিত করতেই সমিতির নামে ধর্মঘট ডেকেছে সরকারি দল। তবে পরিবহন নেতারা বলছেন, মহাসড়কে থ্রি-হুইলার বন্ধের দাবি দীর্ঘদিনের। বিএনপির সমাবেশের সঙ্গে ধর্মঘটের কোনো সম্পর্ক নেই।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি ধর্মঘট ডেকেছে। তারা সমিতির নাম ব্যবহার করছে, তবে পেছন থেকে সুতা টানছে সরকার। তারা বহু চেষ্টা করছে গণসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে। কোনোভাবেই ফরিদপুরের এই গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না।’
জেলা মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নাসির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছি। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে আরও তিনবার ধর্মঘট পালন করা হয়েছে। আমাদের কর্মসূচি আমরা আরও অনেক দিন আগেই ঘোষণা করেছি। বিএনপির সমাবেশের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। মহাসড়কে অবাধে থ্রি-হুইলারসহ বিভিন্ন ছোট যান চলার কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। এসবের দায় সব সময়ই আমাদের ওপর পড়ে। দুর্ঘটনা রোধ করতে এটি আমাদের ধারাবাহিক আন্দোলন। আমরা কারও ভোগান্তি চাই না।’