পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ায় বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করেছে দেশটির বিমানবাহিনী। অভিযানে বিমান থেকে ভয়ংকর বোমা হামলা চালানো হয়েছে, যার ফলে নারী ও শিশুসহ অন্তত ৩০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের সবাই বেসামরিক।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাতে জানা গেছে, এ হামলায় আহতও হয়েছেন অনেকজন। তবে, সুনির্দিষ্ট সংখ্যা এখনও জানা যায়নি।

এদিকে এ হামলা নিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও। যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি জানিয়েছে, সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) খাইবার পাখতুনখোয়ার তিরাহ উপত্যকার মাত্রে দারা গ্রামে পরিচালিত এ অভিযানে ৮টি এলএস-৬ বোমা নিক্ষেপ করেছে পাকিস্তান বিমানবাহিনী।

অভিযানের পরবর্তী মাত্রে দারা গ্রামের কিছু ছবি ও ভিডিওচিত্র প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সেসব ছবি ও ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, বাড়িঘরের ধ্বংসস্তূপ থেকে নিহত ও আহতদের উদ্ধার করছে উদ্ধারকারী বাহিনী। নিহত এবং আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

খাইবার পাখতুনখোয়া রাজ্যটি পাকিস্তানের তালেবানপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) ঘাঁটি অঞ্চল। সন্ত্রাসী হামলা ও তৎপরতার জন্য বেশ কয়েক বছর আগে গোষ্ঠীটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ইসলাবাদ।

গত দুই দশক ধরে খাইবার পাখতুনখাওয়া অঞ্চলে পাকিস্তান প্রায়ই সামরিক অভিযান চালিয়ে থাকে। তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি), ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রভিন্স (আইএসকেপি) এবং আল-কায়েদা-সংশ্লিষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠীর উপস্থিতির কারণে সরকার প্রায়ই এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান চালায় বলে জানা যায়।

চলতি বছরের মার্চ মাসে একই প্রদেশে এক সামরিক অভিযানে ১০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। এ ছাড়া সম্প্রতি একটি ড্রোন হামলায় ৯ জন রাখাল নিহত হয়েছিলেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের অভিযানে বেসামরিক নাগরিকদের ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করে আসছে।

গত জুলাই মাসে তিরাহ উপত্যকায় মর্টার হামলায় এক শিশুসহ বেশ কিছু বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর বিক্ষোভ হয়েছিল। পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী, জঙ্গি হামলায় বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।