কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার ঘটনায় দিল্লি-ইসলামাবাদের উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। এতে এক সেনাসদস্যসহ ৯ জন নিহত হয়েছেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের ৩ জেলায় সেনাবাহিনীর সাথে সন্ত্রাসীদের ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। এতে এক সেনাসহ ৮ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত শনি ও রোববার উত্তর ওয়াজিরিস্তান, খাইবার ও বান্নু জেলায় অভিযান পরিচালনা করেছে সেনাবাহিনী। এ অভিযানে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে ব্যাপক গুলি বিনিময় হয়েছে সেনা সদস্যদের এবং এতে নায়েক মুজাহিদ খান (৪০), এই দেশের সাহসী সন্তান মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন। এর বাইরে ৮ জন খারিজিকে নরকে পাঠানো হয়েছে।”

নিহত সন্ত্রাসীরা সবাই পাকিস্তানের নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সদস্য। সেনবাহিনী অবশ্য কখনও টিটিপির নাম ‍উচ্চারণ করে না, ‘খারিজি’ বা ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবেই উল্লেখ করে। সোমবারের বিবৃতিতে সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের শেকড় উপড়ে ফেলতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”

পাকিস্তানের চার প্রদেশ ও তিন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তান— এ দু’টি প্রদেশে গত কয়েক বছরে সন্ত্রাসী তৎপরতা ও হামলার নাটকীয় উল্লম্ফন ঘটেছে। খাইবার পাখতুনখোয়া মূলত পাকিস্তানপন্থি তালেবানগোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) ঘাঁটি অঞ্চল। অন্যদিকে বেলুচিস্তানে ব্যাপকভাবে তৎপর বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)।

২০২১ সাল থেকে সন্ত্রাসী হামলার উল্লম্ফন পরিলক্ষিত হচ্ছে পাকিস্তানে। গেল বছর ২০২৪ সাল ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ বছর। ২০২৪ সালের বছরজুড়ে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা ৪৪টি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। শতকরা হিসেবে গত এক দশকের মধ্যে ২০২৪ সালে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার হার ছিল ৪০ শতাংশ বেশি।

এসব হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬৮৫ জন সেনা এবং ৯২৭ জন বেসমরিক মানুষ। বিপরীতে গত বছর সেনা-পুলিশ যৌথ অভিযানে নিহত হয়েছে ৯৩৪ জন সন্ত্রাসী।