রুশ প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। আজ (সোমবার) মস্কোতে পৌঁছাবেন এশীয় পরাশক্তি এই দেশটির প্রেসিডেন্ট। পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির তিন দিনের মাথায় এই সফর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনীয় শিশুদের রাশিয়ায় নির্বাসন নিয়ে শুক্রবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) রাশিয়ান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পর শি জিনপিংই হবেন প্রথম বিশ্ব নেতা যিনি পুতিনের সঙ্গে হাত মেলাবেন।
রয়টার্স বলছে, চলতি মাসেই তৃতীয়বারের মতো চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন শি জিনপিং। আর এরপরই রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন তিনি। এছাড়া রাশিয়াও জিনপিংয়ের এই সফরকে এমন ভাবে উপস্থাপন করবে যে, মস্কোর একটি শক্তিশালী বন্ধু রয়েছে যে কিনা পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রস্তুত।
গত শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, আগামী ২০ থেকে ২২ মার্চ পুতিনের আমন্ত্রণে মস্কোতে অবস্থান করবেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এসময় আরও জানানো হয়, ‘এ বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি’ সম্পাদন করা হতে পারে।
এছাড়া দুই দেশের বিস্তৃত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে কীভাবে আরও এগিয়ে নেওয়া যায়, তা নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করবেন শি জিনপিং। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক এজেন্ডা এবং বৈশ্বিক নানা ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতেও সরাসরি কথা বলবেন এই দুই নেতা। দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকটি বড় চুক্তি স্বাক্ষর হবে বলেও উভয় দেশের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে শি জিনপিংকে আমন্ত্রণ জানান পুতিন। তবে ঠিক কবে এই সফর আয়োজিত হবে তার দিন নির্ধারিত হয়নি আগে। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ঘন ঘন ফোনালাপ করেছেন পুতিন। আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সরাসরি দেখাও করেছেন তারা।
গত মাসে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে শান্তি আলোচনা শুরু করতে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছে চীন। রাশিয়া বলেছে, তারা এই প্রস্তাবের বিষয়টি বিবেচনা করে দেখছে। তবে কিয়েভ এখনো তাদের নতুন সীমানার বাস্তবতা মানতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। এটি শান্তির পক্ষে সবচেয়ে বড় বাধা। অপরদিকে, ইউক্রেনও চীনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করতে চান বলেও আগ্রহ জানায়। তবে চীন রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করবে না এমন নিশ্চয়তা চায় ইউক্রেন।