সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ পালিয়ে গেলেও, প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ গাজি আল-জালালি নিজের বাসভবনেই আছেন। তার দাবি, দামেস্কে নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছেন তিনি। সেই সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই তাঁর।
আজ রোববার সকালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ পালিয়ে গেছেন। বিদ্রোহী যোদ্ধারা প্রায় বিনা বাধায় রাজধানী দামেস্কে ঢুকে পড়ার পর বিমানে করে অজ্ঞাত গন্তব্যের উদ্দেশ্যে শহরটি ছেড়ে যান আসাদ।
এরপর আসাদ সরকারের এই প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ গাজি আল-জালালি বিরোধীদের দিকে সহায়তার হাতও বাড়িয়ে দিয়েছেন। সিরিয়ার সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যেন কার্যকর থাকতে পারে বা কাজ চালিয়ে যেতে পারে সেটিও নিশ্চিত করতে চান তিনি।
আল-জালালি বলেছেন, আমি সকলকে যুক্তিযুক্তভাবে চিন্তা করার এবং দেশ নিয়ে চিন্তা করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা বিরোধীদের দিকে আমাদের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি যারা তাদের হাত (আমাদের দিকে) বাড়িয়েছে এবং দৃঢ়ভাবে বলেছি তারা এই দেশের কারও ক্ষতি করবে না।
এদিকে সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি বলেছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর না করা পর্যন্ত সিরিয়ার সরকারি শাসনভার প্রধানমন্ত্রীর অধীনে থাকবে।
তিনি বিদ্রোহী যোদ্ধাদের দামেস্কের সরকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে না যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে।
টেলিগ্রামে একটি বিবৃতিতে বিদ্রোহীদের এই শীর্ষনেতা বলেন, দামেস্ক শহরের সব সামরিক বাহিনীর জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে যাওয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, যেগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে থাকবে।
একইসঙ্গে উন্মুক্ত আকাশে গুলি করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে গোষ্ঠীটি।
২০১১ সালে আরব বসন্তের জের ধরে সিরিয়ার বিক্ষোভ শুরু হয়। ক্রমে তা রুপ নেয় গৃহযুদ্ধে। রাশিয়া আর ইরানের সমর্থনপুষ্ট বাশার আল আসাদ নিজের ক্ষমতা অনেকটা সংহত করে রাখতে পেরেছিলেন। কিন্তু গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া নতুন লড়াইয়ে একের পর এক বড় বড় শহরের নিয়ন্ত্রণ হারায় সরকারি বাহিনী।
রোববার বিদ্রোহী দলগুলো টেলিগ্রাম বার্তায় জানায়, ‘বাথ শাসনের অধীনে ৫০ বছরের নিপীড়নের পরে, এবং ১৩ বছরের অপরাধ ও অত্যাচার এবং (জোর করে) বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর… আমরা আজ এই অন্ধকার সময়ের অবসান এবং সিরিয়ার জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা ঘোষণা করছি।’
দুই সিনিয়র সেনা কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, বিদ্রোহীরা সরকারি বাহিনীর প্রতিরোধ ছাড়াই রাজধানীতে প্রবেশ করেছে। হাজার হাজার গাড়িতে এবং পায়ে হেঁটে দামেস্কের প্রধান চত্বরে জড়ো হয়ে স্বাধীনতা স্লোগান দিচ্ছিল।
বিদ্রোহীরা ঘোষণা করেছে, তারা রাজধানীর উত্তরে কুখ্যাত সাইদনায়া সামরিক কারাগারে প্রবেশ করেছে এবং সেখানে তাদের বন্দিদের মুক্ত করেছে।
শুধু তাই নয়, বিদ্রোহীদের আগমনের খবরে সিরিয়ার সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনী দামেস্ক বিমানবন্দর ত্যাগ করে পালিয়ে গেছে।