বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ রোববার (৮ই জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে হাইকোর্টের রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এর আগে, মঙ্গলবার (তেসরা জানুয়ারি) মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে ছয় মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। পরদিন জামিনাদেশ স্থগিতাদেশ চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত জামিন স্থগিত করে ৮ই জানুয়ারি শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।

গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ও স্থান নির্ধারণ নিয়ে উৎকণ্ঠা-উত্তেজনার মধ্যে গত ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে জমায়েত হওয়া বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে একজনের মৃত্যু ও শতাধিক আহত হন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে হাতবোমা ছোড়া হয়েছে- এমন অভিযোগ তুলে তখন ওই কার্যালয়ের ভেতরে অভিযান চালায় পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতাসহ কয়েক শ নেতা-কর্মীকে। সেদিন ফখরুলকে গ্রেপ্তার না করলেও পরদিন রাতে বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। একই রাতে আটক করা হয় মির্জা আব্বাসকেও। পরদিন ৯ ডিসেম্বর পুলিশের ওপর হামলা ও উসকানি দেওয়ার মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঠানো হয় আদালতে। আদালতে তাদের পক্ষে জামিন আবেদন হলেও তা নাকচ করে পাঠানো হয় কারাগারে। এরপর ১২ ডিসেম্বরও তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়। ১৫ ডিসেম্বর ফের নাকচ হয় তাদের জামিন আবেদন।

গত ২১ ডিসেম্বর আবার জামিন আবেদন করা হলে মহানগর দায়রা জজ আদালত আবেদনটি ২৬ ফেব্রুয়ারি শুনানির তারিখ দেন। এরপর ওই দিন আরেকটি আবেদন করা হলে জামিন নামঞ্জুর করে আবেদনটি খারিজ করেন মহানগর দায়রা জজ আদালত। এই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে এসে আবেদন করা হয়। সে আবেদনে ফখরুল-আব্বাসের জামিন চাওয়া হয়। মামলার এফআইআরে বিএনপির এই দুই নেতার নাম না-থাকা, দায়রা জজ আদালত থেকে মামলার এফআইআরভুক্ত দুই আসামির জামিন, বয়স, অসুস্থতা, সামাজিক অবস্থান তুলে ধরে তাদের জামিন চাওয়া হয়। তবে হাইকোর্টে জামিন আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় যুক্তি দেখিয়ে জামিনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষ। উভয় পক্ষের শুনানির পর হাইকোর্ট গত ৩ জানুয়ারি ফখরুল-আব্বাসকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালী জামিন দেন। সেই সঙ্গে তাদের নিয়মিত জামিন ও জামিন আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে রুল জারি করেন উচ্চ আদালত। পরদিনই জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সে আবেদনের শুনানির পর চেম্বার আদালত ফখরুল-আব্বাসের জামিননামা দাখিল না করতে নির্দেশ দেন এবং আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য রাখেন। আজ (রবিবার) শুনানির পর হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রেখে আদেশ দিলেন সর্বোচ্চ আদালত।