বন্যা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। বন্যা মোকাবিলায় সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।মঙ্গলবার সিলেট সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসনের কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা এবং তালিকা করে সহায়তা দেয়া হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। বানভাসী মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রশাসন এবং দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে গত কয়েকদিনে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনার বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যাকবলিত হয়। প্রায় সব বাড়িঘর তলিয়ে যায় বানের পানিতে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন সেখানকার মানুষ। আজ  মঙ্গলবার (২১শে জুন) সকালে হেলিকপ্টারে চড়ে বন্যা কবলিত এই অঞ্চল পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পরে সিলেট সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অংশ নেন তিনি। সভায় সিলেট ও সুনামগঞ্জ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা ছাড়াও আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বন্যা নিয়ে আগে থেকেই সতর্ক ছিলো। সেজন্য সাথে সাথে সব ব্যবস্থা নিতে পরেছে। আগামীতে এই এলাকার বন্যা মোকাবেলায় নদীর বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ড্রেজিং এবং এলিভেটেড রাস্তা করে দেয়া হবে।

বন্যা মোকাবেলার পাশাপাশি পানি নেমে গেলে রোগবালাই যাতে ছড়িয়ে না পড়ে এবং চাষাবাদ যাতে ব্যহত না হয়, সে ব্যবস্থাও করা আছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। বন্যা মোবাকেলায় এই অঞ্চলের মানুষকে বিকল্প ব্যবস্থা করে রাখার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। যে কোন দুর্যোগে আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের পাশে ছিলো জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের বানভাসী মানুষের সহায়তায় কাজ করার নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিলেট অঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সহায়তা দেওয়া হবে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের যত খাদ্য ও ওষুধ লাগে সব দেওয়া হবে। বন্যায় মাছচাষিরা যাতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারেন সেজন্য ব্যবস্থা নেবে সরকার। বন্যায় যারা কাজ করছেন তাদেরও সাবধান ও সতর্ক থাকতে হবে। বন্যার পানিতে যাতে ঠান্ডা লেগে কেউ অসুস্থ না হন।

এর আগে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। পরে সেখান থেকে সিলেট সার্কিট হাউজে যান। সিলেট সার্কিট হাউজে প্রধানমন্ত্রী বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও বন্যাদুর্গতদের পুনর্বাসন বিষয়ে এক ‘মতবিনিময় সভায়’ অংশ নিয়েছেন। সভায় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত রয়েছেন।

এর আগে নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে সকাল ৮টায় তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারযোগে রওনা হন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দুটি হেলিকপ্টারে তার সফরসঙ্গী হিসেবে আছেন তথ্যমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পরিবেশমন্ত্রী, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজম, আহমদ হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব, এসএসএফের মহাপরিচালক, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব, একান্ত সচিব-১, ব্যক্তিগত চিকিৎসক, পিজিআরের কমাণ্ডার, এডিসি, প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-১, এসএসএফের ৪ জন, বিটিভির ক্যামেরাম্যান এবং মিডিয়া সদস্য ৪ জন।