মহাকালের আবর্তে বিলীন হয়ে গেল আরও একটি খ্রিষ্টীয় বর্ষ। দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা ঘটনায় স্মরণীয় হয়ে থাকা ২০২৪ সাল বিদায় নিয়েছে। সব দুঃখ-বেদনা ভুলে মধ্যরাতে নতুন স্বপ্ন ও নতুন আশা নিয়ে দেশবাসী বরণ করে নিচ্ছে ২০২৫ সালকে। বিশ্বজুড়ে এবারও কোটি কোটি মানুষ স্বাগত জানাচ্ছে নতুন বছরকে।
খ্রিষ্টীয় নববর্ষ-২০২৫ উপলক্ষে দেশে ও প্রবাসে বসবাসকারী সকল বাংলাদেশিসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারাও দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
থার্টি ফার্স্ট নাইটে ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে দুর্ঘটনারোধে বাসাবাড়ির ছাদ ও বাসভবন, উন্মুক্ত স্থান কিংবা পার্কে আতশবাজি, পটকা ফোটানো বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ (আইজিপি) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পুলিশের পক্ষ থেকেও জারি করা হয়েছে নানা বিধি-নিষেধ। দেশজুড়ে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শব্দদূষণ ঠেকাতে মাঠে থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
তবে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাত বারোটা এক মিনিটে রাজধানীর আকাশ ছেয়ে যায় বর্ণিল আতশবাজি আর ফানুসের আলোয়। ঘড়ির কাঁটা বারোটার ঘরে প্রবেশের আগ থেকেই পটকা ফোটানোর শব্দ ভেসে আসছে। নানা স্থানে আতশবাজির প্রস্তুতিও চোখে পড়েছে।
ঘরের বাইরে উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাড়ির ছাদেই পরিবার বন্ধু-বান্ধাব নিয়ে চলে নতুন বছর বরণে আনন্দ উদযাপন। নতুন বছর নতুন কিছু নিয়ে আসবে এমন প্রত্যাশা ছিলো সবার মুখে মুখে। রাজধানীবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শহরজুড়ে ছিলো অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
রাতের আকাশ জুড়ে ঝলমলে আলোকছটা জানান দিলো নতুন বছরের আগমনী বার্তা। ঘড়ির কাটায় রাত ১২টা বাজতেই ২০২৫ সালকে স্বাগত জানাতে রাজধানী যেন পরিণত হয় অন্য নগরীতে। নিষেধাজ্ঞার বেড়াজাল দমিয়ে রাখতে পারেনি রাজধানীবাসীর উদযাপন।
প্রসঙ্গত, জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে শুরু হয় নতুন বছর আধুনিক গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ও জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী। খ্রিষ্টপূর্ব ২০০০ অব্দে ইংরেজি নতুন বছর উদ্যাপনের ধারণাটি আসে, তখন মেসোপটেমিয় সভ্যতার (বর্তমান ইরাক) লোকেরা নতুন বছর উদ্যাপন শুরু করে। তারা তাদের নিজস্ব গণনা বছরের প্রথম দিন নববর্ষ উদ্যাপন করত।
খ্রিষ্টপূর্ব ১৫৩ সালে রোমে নতুন বছর পালনের প্রচলন শুরু হয়। পরে খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ অব্দে সম্রাট জুলিয়াস সিজার একটি নতুন বর্ষপঞ্জিকার প্রচলন করেন। যা জুলিয়ান ক্যালেন্ডার নামে পরিচিত। রোমে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের অন্তর্গত বছরের প্রথম দিনটি জানুস দেবতার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়। জানুস প্রবেশপথ বা সূচনার দেবতা। তার নাম অনুসারেই বছরের প্রথম মাসের নাম জানুয়ারি করা হয়।