ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানী ক্যামিলা দক্ষিণ এশিয়া সফরের পরিকল্পনা করেছেন। এই সফরের অংশ হিসেবে তাঁরা ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সফর করতে পারেন বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর।

ডেইলি মিরর রাজ পরিবারের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছে, ‘এমন একটি সফরের পরিকল্পনা করা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। রাজা ও রানির দক্ষিণ এশিয়া সফর কেবল ব্রিটেনের জন্য রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়। এটি বৈশ্বিক মঞ্চে আমাদের দেশের কৌশলগত অবস্থানকেও মজবুত করবে।’

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস ও তার স্ত্রী রানি ক্যামিলা অদূর ভবিষ্যতে ভারতীয় উপমহাদেশ সফরের পরিকল্পনা করছেন। রাজা তৃতীয় চার্লস ক্যানসার থেকে ধীরে ধীরে সেরে ওঠায় শিগগিরই এই সফরে বের হতে পারেন। ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটেনের রাজার সফরের পরিকল্পনাকে তার শারীরিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতির লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

তবে, ঠিক কবে নাগাদ ব্রিটিশ রাজা ও রানির এই সফর শুরু হতে পারে, সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য জানায়নি ডেইলি মিরর।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর সব ধরনের সফর বাতিল করেছিলেন তৃতীয় চার্লস। তবে, ভারতীয় উপমহাদেশের তিন দেশ— বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তান সফরের এই পরিকল্পনার মাধ্যমে পুনরায় তার সফর শুরু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্রেক্সিট পরবর্তী বিশ্বে তাৎপর্যপূর্ণ অর্থনৈতিক সংযোগ প্রতিষ্ঠা করতে চায় ব্রিটেন। ধারণা করা হচ্ছে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে ব্রিটিশ রাজা ও রানির সফর ।

দেশটির একটি সূত্র বলেছে, ‘রাজা এবং রানির জন্য এই ধরনের সফরের পরিকল্পনা করাটা খুব উৎসাহব্যঞ্জক। ভারতীয় উপমহাদেশে তাদের একটি সফর শুরুর কথা রয়েছে; যা বিশ্বমঞ্চে ব্রিটেনের জন্য রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ হবে। এই সময়ে ব্রিটেনের জন্য রাজা এবং রানিই জুতসই রাষ্ট্রদূত।

ডেইল মিররের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতোমধ্যে রাজা-রানির সফরের জন্য সম্ভাব্য আয়োজক দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনার করতে ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তান সফরের খসড়া তৈরি করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত বছর ভারত সফর বাতিল করার পর রাজা ও রানিকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মোদির ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে দেশটিতে ব্রিটিশ রাজা ও রানির সফর নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। গত মাসে ব্রিকসের শীর্ষ সম্মেলনে সাক্ষাৎ করেছিলেন এই দুই রাষ্ট্রনেতা। এছাড়া গত মঙ্গলবার ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার ‘কৌশলগত অংশীদারত্বে’ স্বাগত জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। যদিও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইউক্রেন যুদ্ধ ‘শান্তিপূর্ণভাবে শেষ’ হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন।

সবশেষ ২০০৬ সালে ক্যামিলাকে সঙ্গে নিয়ে ওয়েলসের যুবরাজ হিসেবে এক সপ্তাহের জন্য পাকিস্তান সফর করেছিলেন তৃতীয় চার্লস। সেই সময় শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘আপনাদের কাছে পৌঁছাতে আমার প্রায় ৫৮ বছর লেগেছে। তবে চেষ্টার অভাব ছিল না।’