ইরানে পুলিশ হেফাজতে তরুণি মাশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে দেশজুড়ে চলা ব্যাপক বিক্ষোভ দমনে এবার সেনা মোতায়েন করেছে দেশটির সরকার। ট্যাংক ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কুর্দিস্তানের সড়কে টহল দিচ্ছে সেনা সদস্যরা। কুর্দিস্তান প্রদেশে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় সেখানে সেনা নামালো ইরান সরকার।
ইসলামী বিপ্লবের ৪৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বিক্ষোভ ও সহিংসতা ঘটছে ইরানে। স¤প্রতি হিজাব ‘ঠিকমতো’ না পরায় আটকের পর পুলিশ হেফাজতে ইরানি তরুণি মাশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। যাতে যোগ দিয়েছে ছাত্র, শিক্ষক, মানবাধিকার ও নারী অধিকার সংগঠনসহ বিভিন্ন পেশাজীবীরা।
এক মাস ধরে চলা বিক্ষোভ কোন কোন এলাকায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। বিক্ষোভ দমাতে নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকায় জনরোষের মুখে পড়তে হচ্ছে ইরান সরকারকে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর তথ্য মতে, এই সহিংসতায় দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছে দুইশ’রও বেশি মানুষ।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, বিক্ষোভ ও সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে কুর্দিস্তান প্রদেশের সানন্দাজ শহরে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে ইরানের সরকার। তারা ট্যাংক, ভারী অস্ত্র নিয়ে টহল দিচ্ছে। যুদ্ধবিমানও উড়তে দেখা গেছে আকাশে। তবে দেশটিতে ইন্টারনেটের ওপর বিধি-নিষেধ থাকায় সব তথ্য ও ছবি ঠিকমতো প্রকাশ পাচ্ছে না।
কুর্দিস্তান হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, গত কয়েকদিনে এই প্রদেশটিতে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৩০ জন বিক্ষোভকারী। আহত হয়েছেন অন্তত ৮২৫ জন। এছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে হাজারও আন্দোলনকারী।
গত ১৩ই সেপ্টেম্বর ইরানের দক্ষিণাঞ্চল থেকে তেহরানে ঘুরতে আসা কুর্দি তরুণি মাশা আমিনি ‘ঠিকমত’ হিজাব না পরায় একটি মেট্রো স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ১৬ই সেপ্টেম্বর পুলিশের হেফাজতে মারা যান তিনি।