প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিচারকদের সাহসিকতার কারণে ১৫ই আগষ্টে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের বিচার করা সম্ভব হয়েছে। এই বিচারের মধ্য দিয়ে দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে মুক্ত হয়েছে। আজ (সোমবার) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ৫৯তম বার্ষিক সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমাজের সবার জন্য ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা যাবে না, সেই আইনও হয়েছিল এ দেশে। ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাতিল করে জাতির পিতা হত্যার বিচার করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। দেশি-বিদেশি সব বাধা উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করেছি। সাধারণ মানুষের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে যা যা প্রয়োজন সরকার সব করেছে।

তিনি বলেন, বিচার না পাওয়ার যন্ত্রণা কি তা আমরা বুঝি, তাই সাধারণ মানুষের জন্য বিচার নিশ্চিত করতে যা যা করা প্রয়োজন, বর্তমান সরকার এর সব করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের জন্য আইনের শাসন নিশ্চিত করা হবে। যতদ্রুত মামলার রায় দেয়া যাবে, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড তত কমবে। জঙ্গিবাদ রুখতে সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিচারকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের জুডিশিয়াল একাডেমি করা হবে বলে এ সময় উলে­খ করেন প্রধানমন্ত্রী।

মামলার রায় যত দ্রুত সম্ভব দিতে বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহŸান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মামলার রায় যত দ্রুত দেওয়া যাবে অপরাধ প্রবণতা তত কমবে বলে মনে করেন সরকার প্রধান।

বিগত সরকারগুলোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশটাকে এমন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, মনে হচ্ছিল এটি পাকিস্তানের একটি প্রদেশ। মানুষের কাছে ভিক্ষা চেয়ে চলার অবস্থায় চলে গিয়েছিল। আমরা ১৯৯৬ সালে প্রথম ক্ষমতায় এসে আইনের শাসন নিশ্চিত করবো বলেছিলাম। আমরা নিজেরাই তো ভুক্তভোগী। বিচার পাাওয়ার অধিকারটুকুই আমরা হারিয়েছিলাম।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে গিয়ে দেশের পাশাপাশি অনেক বিদেশি শক্তির বাধার মুখেও পড়েন বলে জানান শেখ হাসিনা। বড় বড় দেশের সরকারপ্রধানেরা সরাসরি ফোন দিয়েছিলেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি তাদের বলেছি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে তাদের বিচার এখনও চলছে। তাহলে বাংলাদেশে হবে না কেন? লাখো মানুষের ওপর বর্বর অত্যাচারের বিচার করতে আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় সচেষ্ট ছিল। তার দৃষ্টান্ত আপনারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে দেখতে পেয়েছেন।

বিচারকদের সুরক্ষায় সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বিচারকরা রায় দিয়ে বাড়ি ফেরার সময় নানাভাবে আক্রমণের শিকার হতে পারেন। সেজন্য আমরা বিচারকদের নিরাপত্তা জোরদার করার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এ বিষয়ে আরও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।