টানা দুই দিনের অভিযান শেষে ইসরায়েলি বাহিনী চলে যাওয়ার পর জেনিনের শরণার্থী শিবিরে ফিরছেন ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা। স্থানীয় সময় বুধবার সকাল থেকেই তারা ফিরতে শুরু করেছে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ২০০২ সালের এপ্রিলে ইসরায়েলি বাহিনী জেনিনে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান চালায়, যাতে কমপক্ষে ৫২ জন ফিলিস্তিনি এবং এবং ২৩ জন ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হয়। এর দুই দশক পর জেনিনে বড় সামরিক অভিযান চালায় ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের জেনিনের বাসিন্দা ফাতিনা আল-গৌল বলেন, ‘আমাদের পালাতে হয়েছিল। নয়তো আমার মেয়েদের ও আমাকে হত্যা করা হতো।’
একসময় জেনিনের যে স্থানে ফাতিনার বাড়ি ছিল, তা এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই ধ্বংসস্তূপের দিকে তাকিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।
দুই দিনে প্রায় ১৪ হাজার ফিলিস্তিনির বাসস্থান জেনিন শরণার্থী শিবিরে ব্যাপক ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে শরণার্থী শিবিরে থাকা অনেক ফিলিস্তিনি পরিবার অন্যত্র চলে যায়।
সামরিক অভিযানের নামে ১২ ফিলিস্তিনিকে হত্যার পর স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার (৪ জুলাই) মধ্যরাতে ইসরায়েলি সেনাদের বহনকারী গাড়িগুলো জেনিন ছেড়ে চলে যায়। এরপর ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো ক্যাম্পে ফিরতে শুরু করেন।
ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর অভিযানকালে ধ্বংস হয়ে যাওয়া শতাধিক পরিবারের মধ্যে ফাতিনা আল-ঘৌলর পরিবারও আছেন। তিনি এবং আরও নয়জন মহিলা, তার পরিবার এবং প্রতিবেশীরা, কয়েক বছর ধরে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলিদের সবচেয়ে বড় অভিযানের সময় জেনিনের শরণার্থী শিবিরে তাদের বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। অভিযানের পর আবার ক্যাম্পে ফিরে আসেন।
কাঁদতে কাঁদতে ধ্বংসস্তূপের দিকে তাকিয়ে ফাতিনা বলেন, ‘আমার বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। সবকিছু ভেঙে গেছে এবং পুড়ে গেছে। সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অভিযানের সময় পালিয়ে না গেলে আমার মেয়েদের এবং আমাকে হত্যা করা হতো।’
ফাতিনা বলেন, ‘এটি আমাদের বাড়ি। আমরা ভয়ের মধ্যে বসবাস করছি, এবং এটি রক্ষা করার জন্য আমরাই একমাত্র বাকি।’
জেনিন সিটির মেয়র এবং পিএ সদস্য আকরাম বলেন, ‘পিএ এবং ইসরায়েলের মধ্যে চুক্তি রয়েছে। পিএ চুক্তি ভঙ্গ করেনি এবং ফিলিস্তিনি নেতৃত্বের দ্বারা যা করতে বলা হয়েছিল সে অনুযায়ী সামরিক অভিযানের সময় নিরাপত্তা পরিষেবাগুলি তাদের কাজ করেছে।’
এদিকে ইসরায়েলি হামলায় যে ১২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন তাদের স্মরণে জানাজায় এবং এক শোক মিছিলে যোগ দেয় হাজার হাজার মানুষ।