দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার দেশ মালাউইতে ঘূর্ণিঝড় ফ্রেডির আঘাতে নিহত দুই শতাধিক ছাড়িয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বহু মানুষ। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।মালাউইর দুর্যোগ ও ত্রাণ সংস্থা জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ফ্রেডিতে ২০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ১০ জেলায় দুর্যোগময় অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
মালাউইয়ের প্রাকৃতিক সম্পদ ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঝড়টি দুর্বল হয়ে গেলেও এর প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টি ও বাতাস বয়ে যাচ্ছে। যে কারণে ব্যাপক বন্যা ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ছে। উদ্ধারকর্মীরা কাদায় চাপা পড়ে থাকা জীবিতদের খুঁজে বের করতে হিমশিম খাচ্ছেন। রাস্তা ও সেতু ভেঙে পড়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে, ভারি বৃষ্টি ও প্রবল বাতাসের কারণে হেলিকপ্টারও ব্যবহার করা যাচ্ছে না উদ্ধার কাজের জন্য।
টানা ভারি বৃষ্টি ও প্রবল বাতাসের জেরে বেশ কিছু এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ে বিকল হয়ে পড়েছে মালাউইয়ের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা।
পুলিশের মুখপাত্র পিটার কালায়া বিবিসিকে বলেন, ‘নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে। পানিতে ভেসে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, জীব-জন্তুসহ সরঞ্জামাদি। ভবন ধসে পড়ছে।’
সোমবার (১৩ মার্চ) দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ফ্রেডি। উদ্ধারকর্মীরা কাদায় চাপা পড়া জীবিতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ঝড়ের পর মালাউইয়ের বিদ্যুৎ সরবরাহ বিকল হয়ে গেছে। দেশের বেশিরভাগ অংশে দীর্ঘস্থায়ী ব্ল্যাকআউটের সম্মুখীন হয়েছে। অবিরাম বৃষ্টি ও প্রচণ্ড বাতাসের কারণে কিছু এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ত্রাণ সংস্থাগুলো সতর্ক করছে, এই ধ্বংসযজ্ঞ মালাউইতে কলেরার প্রাদুর্ভাব বাড়িয়ে দেবে। ফ্রেডি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো চলতি সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকা অতিক্রম করে। এর আগে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে প্রথমবার আঘাত হানে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, দক্ষিণ গোলার্ধে রেকর্ড হওয়া সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়গুলোর মধ্যে ফ্রেডি অন্যতম।
ঝড়ে প্রচুর পরিমাণে পানি আবাসিক এলাকাগুলোতে ঢুকে পড়েছে। ভেসে গেছে বাড়িঘর। মালাউইয়ের বাণিজ্যিক কেন্দ্র, ব্লানটায়ার ভয়াবহ আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ত্রাণ সংস্থাগুলো সতর্ক করছে যে, এই ধ্বংসযজ্ঞ মালাউইতে কলেরার প্রাদুর্ভাবকে আরও বাড়িয়ে দেবে।
পুলিশের মুখপাত্র পিটার কালায়া বলেন, ‘আমাদের নদীগুলো উপচে পড়ছে। পানিতে মানুষ ভাসছে, আমাদের ভবন ধসে পড়ছে।’
মেডিক্যাল দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, হাসপাতালে পৌঁছানোর পর ৪০ টিরও বেশি শিশুকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
হাসপাতালগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, মর্গে লাশ রাখার জায়গা নেই। তাই দ্রুত স্বজনদের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।