বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে সংবিধানে স্বীকৃতি দেওয়া মূল সংবিধানের পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। আজ বুধবার হাইকোর্টে সংবিধানের ১৫তম সংশোধনী বাতিলের রুলের শুনানিতে এ কথা বলেন তিনি।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘শেখ মুজিবের অবদানকে কেউ অস্বীকার করে না। কিন্তু তাকে জাতির পিতা বলে সংবিধানে স্বীকৃতি দেওয়া মূল সংবিধানের পরিপন্থী।’
রাষ্ট্রপক্ষ কেন এই সংশোধনী বাতিল চায় সেই যুক্তি তুলে ধরতে গিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে এই নয় যে, শত শত মানুষকে গুম করা, হত্যা করা, নির্বিচারে গায়েবি মামলা দেওয়া কিংবা তথা কথিত গণতন্ত্রের নামে জনগণের সাথে প্রতারণা করা।
সংবিধানে দেশের সকল নাগরিককে জাতি হিসেবে বাঙালি বলার বিরোধিতা করে তিনি বলেন, এর ফলে পাবর্ত্য অঞ্চলের বিভিন্ন উপজাতিদের জোরপূর্বক বাঙালি পরিচয় দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এতে বাংলাদেশি সার্বভৌমত্বের মধ্যে ঐক্য ধ্বংশ করে বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছে।
এর আগে, ২০১১ সালে ১৫তম সংশোধনীতে বঙ্গবন্ধুকে ‘জাতির পিতা’ হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা এখন হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। শুনানি চলাকালে অ্যাটর্নি জেনারেল এই যুক্তি তুলে ধরেন, যেখানে তিনি বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো এবং মূল লক্ষ্যের প্রতি সঙ্গতি রেখে কোনো ব্যক্তি বিশেষের উপাধি সংবিধানে যুক্ত করা উচিত নয়।
তিনি আরও বলেন, “এই সংশোধনীটির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘জাতির পিতা’ হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল একটি দলের ক্ষমতার মেয়াদ বাড়ানো। যা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।”
এর আগে, গত ১৬ অক্টোবর তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অন্তর্বর্তী সরকার ‘জাতির পিতা’ হিসেবে বিবেচনা করে না। তার এই বক্তব্যে জাতীয়ভাবে বিতর্ক সৃষ্টি হয় এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।