বিশ্বকাপের এক সপ্তাহ আগে নিউজিল্যান্ডের কাছে যাচ্ছেতাইভাবে সিরিজ হারলো টাইগাররা। মিরপুরে আগে ব্যাট করতে আজ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে লাল-সবুজ দল। অভিষিক্ত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ৭৬ রানের ইনিংসে শেষ পর্যন্ত ১৭১ রানে থামে টাইগাররা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে কিউইরা লক্ষ্য পেরিয়ে গেছে ৯১ বল আর ৭ উইকেট হাতে রেখেই। ৯১ বল হাতে রেখে পাওয়া জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে কিউইরা। সিরিজের প্রথম ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছিল।

মঙ্গলবার মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষটিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৩৪ ওভারেই অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা, করে ১৭১ রান। ওই রান ৯১ বল আগেই তাড়া করে কিউইরা।

অল্প রান তাড়া করতে নেমে সাবধানী শুরু করে নিউজিল্যান্ড। দলটির দুই উদ্বোধনী ব্যাটার গড়েন ৪৯ রানের জুটি। তাদের এই জুটি ভাঙেন শরিফুল ইসলাম। ৬ চারে ২৬ বলে ২৮ রান করা ফিন অ্যালেন তার বলে ডিপ ফাইন লেগে দাঁড়ানো উইল ইয়ংয়ের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ঠিক তার পরের বলেই দুর্দান্ত একটি ডেলেভারিতে অভিষিক্ত ডিন ফক্সক্রফটকে বোল্ড করে গ্যালারিতে উচ্ছ্বাস ফেরান শরিফুল।

তার ভেতরে ঢোকা বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হন ফক্সক্রফট। জাগিয়ে তোলেন হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও। যদিও সেটি করতে পারেননি তিনি। তবে ওই স্পেলে দুর্দান্ত বল করেন শরিফুল।

তবে ম্যাচের মোড় এরপর হেনরি নিকোলসকে নিয়ে ঘুরাতে থাকান উইল ইয়ং। এই ব্যাটার মুখোমুখি হওয়া নবম বলে গিয়ে পেয়েছিলেন প্রথম রানের দেখা। নাসুম আহমেদের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১০ চারে ৮০ বলে ৭০ রান করেন তিনি। ততক্ষণে অবশ্য নিকোলসের সঙ্গে ৭৯ রানের জুটিতে ম্যাচ বের করে ফেলেছেন তিনি। বাকি কাজটা সারেন নিকোলস ও ব্লান্ডেল। ৮৬ বলে ৫০ রানে নিকোলস ও ১৫ বলে ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন ব্লান্ডেল।

আগে ব্যাট করতে নেমে টাগারদের হয়ে ওপেনিংয়ে আসেন অভিষেক হওয়া জাকির হাসান ও তানজিদ তামিম। তবে ওয়ানডে অভিষেকটা সুখকর হয়নি জাকিরের। পেসার অ্যাডাম মিলনের বলে ৫ বলে ১ রান করে আউট হয়েছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। এরপর বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে পারেনি আরেক ওপেনার তামিমও। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের ট্রেন্ট বোল্টের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

ফলে শুরুতেই দলীয় আট রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারিয়ে বিপাকে পরে বাংলাদেশ। চতুর্থ উইকেটে তাওহীদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠার চেষ্টায় ছিলেন অধিনায়ক শান্ত। কিন্তু তাও সফল হয়নি। দুজন মিলে স্কোরবোর্ডে ২৭ রান তুলতেই ব্যক্তিগত ১৮ রানে সাজঘরে ফিরেন হৃদয়।

হৃদয় আউট হওয়ার পর ক্রিজে শান্তর সঙ্গী হন মুশফিকুর রহিম। এ দুজনের ব্যাটেই আজ বিপর্যয় সামলে ওঠে বাংলাদেশ। মুশফিক-শান্ত জুটি দলীয় সংগ্রহে যোগ করেন ৫৩ রান। এদিকে জুটি বড় হলেও নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি মুশফিক।

লকি ফার্গুসনের করা বল প্রথমে মিস্টার ডিপেন্ডেবলের ব্যাটে লেগে আঘাত করে স্ট্যাম্পে। ফলে মুশফিককেও ফিরতে হয় মাত্র ১৮ রান করেই। এদিকে এক প্রান্তে যাওয়া-আসার খেলা চলতে থাকলেও অপর প্রান্তে লড়াইয়ে চালিয়ে গেছেন শান্ত। মুশফিকের বিদায়ের পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গেও আরও একটি বড় জুটি গড়েছিলেন তিনি। এ দুজনের জুটিতে স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ৪৯ রান।

তবে ২৭ বলে ২১ রান করে মাহমুদউল্লাহ ফেরার পর শেখ মেহেদীও ফিরেছেন ব্যর্থ হয়েই। এরপর শান্তও ৭৬ রানে ফিরলে পরে আর বেশি দূর এগোতে পারেনি বাংলাদেশ। অল আউট হয় মাত্র ৩৪.৩ ওভারে ১৭১ রান করেই। কিউইদের হয়ে বল হাতে চারটি উইকেট নিয়েছেন অ্যাডাম মিলনে।