প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের ‘এক দফা’ দাবি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠনটির সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই ঘোষণা দেন। শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহীদ মিনারে সমবেত ছাত্র-জনতার উদ্দেশে বক্তব্য দেন নাহিদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হবে।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিশাল জমায়েতের পাশাপাশি সায়েন্স ল্যাবরেটরি, মিরপুর, শান্তিনগর, আফতাবনগর, প্রগতি সরনী, রামপুরা, উত্তরা ও শনির আখড়াসহ বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ করে। এসব কর্মসূচিকে ঘিরে সতর্ক থাকলেও কোথাও বিরোধে জড়ায়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।

সরকারের পদত্যাগের এক দফা ঘোষণা আন্দোলনকারীদের

বৃষ্টিভেজা শনিবার দুপুরেও বিক্ষোভ হয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনে সহিংসতা ও হতাহতের প্রতিবাদে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাদের সাথে যোগ দেয় বিভিন্ন পেশার মানুষ।

৯ দফা দাবির এ কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেয় বিক্ষোভকারীরা। বন্ধ করে দেয় যানচলাচল। আন্দোলকারীদের ওপর গুলি বন্ধের দাবি জানিয়ে জাতীয় পতাকা এবং প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দেয় তারা। কোথাও কোথাও এই কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন অভিভাবকরা।

দুপুরের পর রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহীদ মিনার এলাকায় জড়ো হয় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। ধীরে ধীরে তা রূপ নেয় বিশাল সমাবেশে। সেখান থেকে একদফা ঘোষণা করে আন্দোলনের সমন্বয়করা।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রাঙ্গণ থেকে ভিড় ছড়িয়ে পড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জগন্নাথ হলসহ অন্যান্য রাস্তায়। স্লোগানে মুখর হয় সেসব এলাকা।

এর আগে বেলা ১২টার দিকে ঢাকার সায়েন্স ল্যাব মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। বিপুল সংখ্যক পুলিশ অবস্থান নিলেও কর্মসূচিতে কোনো বাধা দেয়নি।

যাত্রাবাড়ীর শনির আখরা ও কাজলা এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের উপরেও যানচলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর আফতাবনগরে ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনের রাস্তায় শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয়। দুপুর ২টার দিকে রামপুরা ব্রিজ থেকে মেরুল বাড্ডা পর্যন্ত সড়কে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বাধা না দিয়ে দূর থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীকে।

এছাড়া মিরপুর, প্রগতি সরণি, উত্তরা, খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে ও শান্তিনগর মোড়ে বিভিন্ন স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয়। সব কর্মসূচি ঘিরেই সতর্ক অবস্থানে ছিলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।