আগামী ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও তুরাগ তীর ছাড়া অন্য কোনো উপযুক্ত মাঠ দিলে বিএনপি বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে এখনো নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ করতে চায় তারা। এরই মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেছেন, আমাদের দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস সাহেব গতকাল (শনিবার) বলেছেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়া ঢাকার ভেতরে সমাবেশের জন্য বিকল্প ভেন্যুর প্রস্তাব পেলে তা বিবেচনা করা হবে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলছি, আমাদের বিভাগীয় সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। আমরা আমাদের পরবর্তী দাবি জানাবো। ভবিষ্যৎ কর্মসূচির কথা বলবো।
রোববার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকার ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশ ঘিরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পুলিশের রেইড চলছে। আমাদের নেতাকর্মীরা ঘরে থাকতে পারছেন না। গত ৩০ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় ১০৩১ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ বানচাল করতে সরকারের নানামুখী দমননীতি এখন সর্বসাধারণের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। গতকাল (শনিবার) বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসার সামনে সেই বালির ট্রাকের কায়দায় চেকপোস্ট-ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশ অবরোধ করে রেখেছে। এটি দেশনেত্রীর ওপর নিপীড়নের আরেকটি নতুন মাত্রা। আমি সরকারের এই ঘৃণ্য আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, একজন জনপ্রিয় নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায়ে কারারুদ্ধ রেখে চিকিৎসার সব পথ রুদ্ধ করে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী সরকার। তার বাসভবন অবরোধ করে এবং জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়ে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আমি এ মুহূর্তে দেশনেত্রীর বাড়ির সামনে থেকে চেকপোস্ট ও ব্যারিকেড তুলে নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির গণসমাবেশ কর্মসূচি ঘিরে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করার জন্য প্রায় মাসখানেক আগে ঢাকা জেলা আদালতে জঙ্গি নাটকের অবতারণা করা হয়। বেশ কিছুদিন চুপ থেকে এখন সেই জঙ্গি ধরার নামে মেস, আবাসিক হোটেল ও বাসাবাড়িতে পুলিশ ব্লক রেইড দিচ্ছে। পুলিশের এই হানা মূলত বিএনপির নেতাকর্মীদের পাইকারি হারে গ্রেফতার, হয়রানি ও আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য। ২০১৩-১৫ সালের পুরনো নাটকেরই পুনরাবৃত্তি এই গণ গ্রেফতার। আমি এই ঘৃণ্য চক্রান্তের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, পুলিশের আইজি বলছেন, ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ ঘিরে নাশকতার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। তাহলে কেন এই নাটক অভিযান? সরকার এক সুদূরপ্রসারী অশুভ মাস্টারপ্ল্যানের পথে হাঁটছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এনি, কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শহীদু ইসলাম প্রমুখ।