সৌদি আরব বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তাদের রয়েছে গভীর শ্রদ্ধা ও আস্থা। আমরা সৌদি আরবকে সবসময় কাছাকাছি পেয়েছি।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের করবী হলে আয়োজিত বেসরকারি গ্লোবাল অপারেটর আরএসজিটিআই এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি আস্থা-সহযোগিতার জন্য আমি সৌদি সরকারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই। বিশেষ করে সৌদি বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ এবং যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা রইলো। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আপনাদের সবার অঙ্গীকার আমরা গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি।
তিনি বলেন, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে একটি শক্তিশালী এবং টেকসই অংশীদারিত্বের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এই কনসেশন চুক্তি অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সমৃদ্ধির জন্য আমাদের দুই দেশের যৌথ দৃষ্টিভঙ্গি এবং অটল অঙ্গীকারের উদাহরণ। এটি আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র আরও জোরদার করবে।
সরকারপ্রধান বলেন, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল প্রকল্পটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের আশার বাতিঘর। স্বয়ংসম্পূর্ণ এই আধুনিক টার্মিনালটি আমাদের বন্দরের সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করবে এবং নিরবচ্ছিন্ন বাণিজ্য সহজতর করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান ও নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির পথও সুগম করবে।
প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরবকে বন্ধুপ্রতীম দেশ এবং বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, ‘সৌদি আরবের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের গভীর শ্রদ্ধা ও আস্থা রয়েছে। আমরা সবসময়ই সৌদি আরবকে আমাদের হৃদয়ের কাছাকাছি পেয়েছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, আরএসজিটি সৌদি সরকার মনোনীত একটি স্বনামধন্য গ্লোবাল টার্মিনাল অপারেটর। তিনি পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনার জন্য টার্মিনাল অপারেটর নিয়োগের কারণে সৌদি সরকারকে তার আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার স্বীকৃতি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি আশা করি জেদ্দা বন্দর এবং অন্যান্য টার্মিনাল পরিচালনার জন্য খ্যাতি অর্জনকারী আরএসজিটি পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালও তার দক্ষতা এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞানের সাথে পরিচালনা করবে।’
এতে করে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম আরো দক্ষ এবং আন্তর্জাতিক মান পূরণ হবে বলেও উল্লেখ করেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, ‘এর ফলে, আমাদের অর্থনীতি আমদানি-রফতানি ব্যয় উল্লেখযোগ্য হ্রাস থেকে উপকৃত হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি আস্থা ও সহযোগিতার জন্য বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রতি কৃতঞ্জতা প্রকাশ করেন।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নে দৃঢ় সমর্থনের জন্য সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রী ও তার প্রতিনিধিদলকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আপনার প্রতিশ্রুতি গভীরভাবে প্রশংসিত।’
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ এবং আরএসজিটি চেয়ারম্যান আমের এ আলীরেজা বক্তব্য রাখেন। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
এ সময়ে বাংলাদেশে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত এসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান ছাড়াও সৌদি ও বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : বাসস