উন্নয়নশীল ও স্বল্পন্নোত দেশগুলোর উন্নতির পথে অন্যতম প্রধান অন্তরায় শিশুশ্রম। বিশ্বব্যাপী মোট শিশুর ১০ শতাংশ শিশুশ্রমের শিকার, সংখ্যায় যা প্রায় ১৬ কোটি। শিশুদের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও শিক্ষা বিকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে শিশুশ্রম। দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এ বছরের শেষে আরও ৮ কোটি ৯০ লাখ শিশু, শ্রমিকে রুপান্তরিত হবে বলে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা ও ইউনিসেফ।

জাতিসংঘের হিসেবে, পাঁচ থেকে ১৭ বছর বয়সী যে শিশুরা স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে শ্রমের বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করে তারাই শিশু শ্রমিক। বিশ্বে মোট শিশু শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। এরমধ্যে ৭০ শতাংশই কৃষিখাতের শ্রমে জড়িত। মোট শিশু শ্রমিকের ১১ দশমিক দুই শতাংশ ছেলে এবং সাত দশমিক আট শতাংশ মেয়ে।

এই বিপুল সংখ্যক শিশু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা আগামী বিশ্বের জন্য আশংকাজনক। উৎপাদন খরচ বাঁচাতে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শিশুদের শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। খনির কাজ, নির্মাণ শিল্প, হোটেল বার, রেস্তোরাঁর সহযোগি এবং গার্হস্থ্য পরিষেবার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সাথে জড়িত শিশুর সংখ্যাই এরমধ্যে বেশি। অনেক সময় অনিরাপদ এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করতে শিশুকে বাধ্য করা হয়।

ঝুঁকিপূর্ণ কাজে জড়িত শিশুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি আফ্রিকাতে। যেখানে প্রায় চার কোটি ১৩ লাখ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সাথে জড়িত। ইউরোপ, মধ্য আমেরিকা, আরব, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক শিশুও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে।

আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা ও ইউনিসেফের দেয়া তথ্যমতে, দ্রুত কার্যকর প্রদক্ষেপ না নিলে এ বছরের শেষে আরও ৮ কোটি ৯০ লাখ শিশু শ্রমিকে রুপান্তরিত হবে। গুরুতর এই সমস্যায় জর্জরিত ৫৪টি দেশকে শিশুশ্রম থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্যের প্রতিশ্র“তি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এরইমধ্যে ৬৫টি দেশে ২ কোটি ইউরো ব্যয়ে ১৫০টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে তারা, যার ১০ কোটিই ব্যয় হবে শিক্ষাখাতে।