১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১১ই ফেব্রুয়ারি সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে ‘পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করবে দলগুলো। আজ (শনিবার) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংক সংলগ্ন রাস্তায় ১২ দলীয় জোটের উদ্যোগে ঢাকা বিভাগের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন জোটের নেতারা। একই ইস্যুতে রংপুর ও সিলেট বিভাগেও সমাবেশ করেছে ১২ দলীয় জোট। গ্যাস ,বিদ্যুৎ, চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

সমাবেশে জোটের শীর্ষনেতারা বলেন, জনগণের সম্মতিহীন এই অবৈধ সরকারকে বিদায় করা জনগণের রাজনৈতিক কর্তব্য। সরকারকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে অপসারণ করা অনিবার্য হয়ে পড়েছে।

জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদার পরিচালনায় বিভাগীয় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, এনডিপির চেয়ারম্যান ক্বারী মুহাম্মদ আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) চেয়ারম্যান এডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, জাগপার সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, ইসলামী ঐক্য জোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আমিন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব নুরুল কবির পিন্টু, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেমসহ ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, বিরোধী দলগুলোর চলমান শান্তিপূর্ণ যুগপৎ কর্মসূচিতে সরকার অব্যাহত উস্কানি দিয়ে সহিংসতার পথে নিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় সরকারের যাবতীয় উস্কানি হামলা ও দমন-পীড়ন মোকাবলা করে ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে যুগপৎ ধারায় আরো বেগবান করার জন্য সব বিরোধী দল ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তারা।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, স্বাধীন দেশে আজ ভিন্ন মত দমনে রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে কর্তৃত্ববাদী শাসনের সামাজিক ভিত্তি রচনা করা হচ্ছে। সরকারের কুৎসিত ক্ষমতা লিপ্সা রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে, রাষ্ট্রকে দেউলিয়া করে ফেলেছে। সুতরাং দেশ ও জনগণের স্বার্থেই এই অবৈধ সরকারের পতন ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর আবশ্যক হয়ে পড়েছে।

তারা আরও বলেন, ষড়যন্ত্র নয়, ভোটারবিহীন অনির্বাচিত এবং অসংবিধানিক সরকারের পতন ঘটবে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। বক্তারা বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ হা-হুতাশ করছে। সামনে রমজান মাস এখনই দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষ আতঙ্কে আছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে, প্রতারণা করে জনগণের কাছ থেকে সব টাকা লুটপাট করে নিচ্ছে।

জোট নেতারা আরও বলেন, দেশের মানুষ চলমান আন্দোলনে বিজয়ী হয়ে ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্রের দাবি আদায় করে ঘরে ফিরবে। তাই চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শরিক হয়ে অবৈধ সরকার পতনের আন্দোলনকে বেগবান করতে জনগণকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান বক্তারা।