শুরু হলো রক্তের আখরে লেখা শোকাবহ আগস্ট। বাঙালির ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কিত ঘটনা ঘটে এই মাসে। পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্ট স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। আবার ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টায় গ্রেনেড হামলাসহ বহু ঘটনায় স্মৃতিকাতর এই মাস। ১৫ই আগষ্ট জাতির পিতাকে হারানোর দিনটি তাই জাতীয় শোক দিবস। শোকের এই মাসে মাসব্যাপী নানা কর্মসূচি নিয়েছে আওয়ামী লীগ।

বাঙালির ইতিহাসে নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের কালিমালিপ্ত অধ্যায়ের সূচনা হয় আগস্ট মাসে। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতকচক্র বাঙালি জাতির মুক্তি আন্দোলনের মহানায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে।

শেখ মুজিবুর রহমান কেবল একজন ব্যক্তির নাম নয়, তিনি নিজেই এক অনন্যসাধারণ ব্যতিক্রমী ইতিহাস। সমাজ, দেশ ও কালের প্রেক্ষাপটে তিনি ব্যক্তি মুজিব থেকে হয়ে উঠেছিলেন বঙ্গবন্ধু। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক নেতা থেকে হয়ে ওঠেন ইতিহাসের মহানায়ক।

দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রামের নেপথ্যের কারিগর বঙ্গবন্ধুর ডাকেই সমগ্র বাঙালি জাতি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল স্বাধীনতাযুদ্ধে। তার হাত ধরেই ১৯৭১ সালে বিশ্বের মানচিত্রে প্রথমবারের মতো অঙ্কিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশ। বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে তার নাম লেখা হয়ে যায় স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতিরূপে।

কিন্তু স্বাধীনতার কয়েক বছর পর একদল অকৃতজ্ঞ বাঙালি নৃশংসভাবে হত্যা করে জাতির পিতাকে। ১৯৭৫ সালের এ মাসেই বাঙালি হারিয়েছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

এদিন ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেল এবং পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামালসহ পরিবারের ১৭ জন।

১৫ আগস্টের কালরাতের পর গোটা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া, ছড়িয়ে পড়ে ঘৃণার বিষবাষ্প। সেই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের ৪৬ বছর পেরিয়ে গেছে। আজও বাঙালি জাতি পদে পদে বঙ্গবন্ধুর অভাব অনুভব করে। বাঙালির প্রতিটি অর্জনে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয় ইতিহাসের মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমানকে।