শ্রীলংকায় বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবস এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন করেছে। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে এবং জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে হাইকমিশনার তারেক মো: আরিফুল ইসলাম দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা করেন।
পরে জাতির পিতা ও ১৫ই আগস্ট শাহাদৎ বরণকারী তাঁর পরিবারের সদস্য ও অন্যান্যদের আত্মার মাগফেরাত এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ধারাবাহিক সুখ, সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। দূতাবাসের কর্মকর্তারা দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রদত্ত- রাস্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন।
সন্ধ্যায় শ্রীলংকার কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিক ও বাংলাদেশ কমিউনিটির সম্মানিত সদস্য এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা কর্মচারীগণের অংশগ্রহণে একটি স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। সভার প্রারম্ভে বঙ্গবন্ধুসহ সকল শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত “বঙ্গবন্ধু- চির অম্লান হৃদয়ে আমাদের” শীর্ষক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয় । স্মরণসভার আলোচক হিসাবে বক্তব্য দেন দেন শ্রীলংকায় WFP এর Country Director আব্দুর রহিম সিদ্দিকী, বাংলাদেশে নিযুক্ত শ্রীলংকার সাবেক রাষ্ট্রদূত ক্রিসান্তি ডি সিলভা এবং South Asia Co-operative Environment Programme (SACEP) এর মহাপরিচালক ডঃ মাছুমুর রহমান। তারা বঙ্গবন্ধুর গভীর রাজনৈতিক দর্শন ও তাঁর কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিকের উপর আলোকপাত করেন।
হাইকমিশনার তাঁর সমাপনী বক্তব্যে জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের স্থপতি হিসাবে তাঁর অবিস্মরণীয় অবদানের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর বিশ্বদর্শন আজও সমান ভাবে প্রাসঙ্গিক যা তাঁকে একজন বিশ্বনেতা এবং মানবতা ও শান্তির দূত হিসাবে বিশ্বদরবারে স্বীকৃতি দিয়েছে। জাতীয় শোক দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ১৫ই আগস্টে ব্যক্তি মুজিবকে বাঙালি জাতি হয়ত হারিয়েছে কিন্তু তাঁর আদর্শ লালন করে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথে দীপ্ত পদে এগিয়ে চলছে। সকলের স্ব স্ব দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা গেলে জাতির পিতার প্রতি সত্যিকারের সম্মান প্রদর্শন করা হবে মর্মে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
উপরোক্ত অনুষ্ঠান ছাড়াও, দূতাবাস কলম্বোর একটি মুসলিম এতিমখানায় জাতির পিতার উদ্দেশ্যে পবিত্র কোরান শরীফ খতম ও বিশেষ দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করে এবং পরে এতিমদের মাঝে উন্নত খাবার পরিবেশন করা হয়। তাছাড়া বঙ্গবন্ধুর স্মরণে শ্রীলংকা স্কাউটস এর সহযোগিতায় দূতাবাস দুস্থদের জন্য শ্রীলংকার বিভিন্ন অঞ্চলে “কমিউনিটি কিচেন” এর আয়োজন করে।