জাতীয় সংগীত অবমাননার অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আগামী ১২ জানুয়ারি এ মামলার রায় হতে পারে। মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মুম্বাইয়ে গীতিকার জাবেদ আখতারের ব্যবস্থাপনায় এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন মমতা ব্যানার্জি। ওই অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত গান তিনি। একপর্যায় মমতা জাতীয় সংগীত থামিয়ে মঞ্চ থেকে নেমে যান।
২০২৪ লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বিজেপি-বিরোধী দলগুলিকে একত্রিত করার লক্ষ্যে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে মুম্বই গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বাণিজ্যনগরীতে বিদ্বজ্জনদের সঙ্গে একটি আলোচনা সভায় অংশ নেন মমতা। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে জাতীয় সংগীত (National Anthem) অবমাননার অভিযোগ তুলেছিলেন স্থানীয় বিজেপি নেতা। মুম্বইয়ের ওই বিজেপি নেতার অভিযোগ ছিল, মমতা বসেই জাতীয় সংগীত গাওয়া শুরু করেন। এবং সেটি কয়েক লাইন গেয়ে সম্পূর্ণ করার আগেই ‘জয় বাংলা, জয় মহারাষ্ট্র’ স্লোগান দিয়ে ওঠেন। মুম্বইয়ের বিজেপি (BJP) নেতার সেই অভিযোগকে হাতিয়ার করে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারাও সরব হন।
পরে ওই বিজেপি নেতা মুম্বইয়ের স্থানীয় একটি আদালতে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার ভিত্তিতে এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে তলব করে মাজগাঁওয়ের নগর দায়রা আদালত (Metropolitan Magistrate Court) সেই সমনের বিরুদ্ধে আবার এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পালটা মুম্বইয়ের এমপি-এমএলএ কোর্টে আবেদন করেন। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি ছিল, জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে কোনওরকম পদক্ষেপের জন্য প্রশাসনিক অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে সেটা নেওয়া হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রীর সেই সওয়ালের পালটা কৌশলী অবস্থান নিল মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকার। এমপি-এমএলএ কোর্টে মহারাষ্ট্র সরকারের আইনজীবী দাবি করলেন, মমতার ওই সফর ছিল রাজনৈতিক। তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় সংগীত অবমাননার অভিযোগও উঠেছে রাজনৈতিক মঞ্চেই। কোনও সরকারি অনুষ্ঠানে নয়। তাই মমতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের জন্য কোনও সরকারি অনুমতির প্রয়োজন নেই। আগামী ১২ জানুয়ারি মুম্বইয়ের এমপি-এমএলএ আদালত মামলার রায় দেবে। সেদিনই স্পষ্ট হয়ে যাবে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের পাঠানো সমন বৈধ কিনা।