পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থবিভাগ ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী গৃহীত ঋণের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তি পরিশোধ করা হয়েছে। আজ বুধবার (৫ এপ্রিল) গণভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে ৩১৬ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার ৪৯ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।

এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  বলেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে বাংলাদেশ যে কোনো বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাবে। পদ্মা সেতুর ঋণ পরিশোধের প্রথম কিস্তির চেক গ্রহণকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, জনগণ আমাদের পাশে থাকলে যে কোনো প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে আমরা এগিয়ে যেতে পারব। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ এর সেরা উদাহরণ।’

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের  প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঋণ পরিশোধের প্রথম কিস্তি হিসেবে প্রায় ৩১৬ কোটি ৯১ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু নির্মাণে ঋণ স্থগিত এবং পরবর্তীকালে আরও কয়েকটি সংস্থা একই কাজ করায় চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়ার পর তারা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন।

অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী পদ্মা সেতু নির্মাণে কেন্দ্রীয়  ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে এ ঋণ নেয়া হয়। গত বছরের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী প্রমত্তা পদ্মা নদীর ওপর ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের বৃহত্তম সেতু উদ্বোধন করেন।

১৪০টি ত্রৈমাসিক কিস্তিতে আগামী ৩৫ বছরে পদ্মা সেতু নির্মাণে সরকারের দেয়া সব ঋণ পরিশোধ করবে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টাদশ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ কথা জানিয়েছিলেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সেসময় তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন থেকে আদায় করা টোল দিয়ে ৩৫ বছরে ১৪০টি ত্রৈমাসিক কিস্তিতে সরকারের দেয়া সব ঋণ পরিশোধ করবে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। এ হিসেবে ২০৫৭ সাল নাগাদ টোল আদায়ের মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর জন্য ব্যয়িত অর্থ উঠে যাবে।

পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করা হয়েছে। তবে এই টাকা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে ঋণ হিসেবে দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ৩৫ বছরে ঋণের টাকা ১ শতাংশ হারে সুদসহ ফেরত দিতে হবে।

এ জন্য তিন মাস পরপর কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। সব মিলিয়ে ১৪০ কিস্তিতে ঋণের টাকা (সুদ ও আসলে) পরিশোধ করা হবে।