ঢাকায় একমাত্র টেস্ট ক্রিকেটে ৫৪৬ রানের বড় ব্যবধানে আফগানিস্তানকে হারালো বাংলাদেশ। শুধু রানের হিসেবে টেস্ট ইতিহাসের তৃতীয় বৃহত্তম জয় এটি কোনো দলের। প্রথম ইনিংসে ৩৮২ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ, আফগানিস্তান অলআউট হয় ১৪৬ রানে। পরে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে ৪২৫ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। ৬৬২ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১১৫ রানের বেশি করতে পারেনি আফগানরা।
বাংলাদেশের এই জয়টি রেকর্ড গড়াও। ১৯২৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬৭৫ রানে জেতে ইংল্যান্ড। ছয় বছর পর ইংল্যান্ডকে ৫৬২ রানে হারায় অস্ট্রেলিয়া। এরপর রানের ব্যবধানে তৃতীয় সর্বোচ্চ বড় জয় এটি। আর ৮৯ বছরে এটিই সবচেয়ে বড় জয়। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশেরও রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয় এটি।
এর আগে টস হেরে শুরুতে ব্যাটিং করতে নেমে ৩৮২ রান করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান। ২৩৬ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে ৪ উইকেটে ৪২৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। এরপর ৬৬২ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় নেমে মাত্র ১১৫ রানে থেমে গেছে সফরকারীদের ইনিংস।
শনিবার (১৭ জুন) ‘হোম অব ক্রিকেট’ শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের দেওয়া ৬৬২ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়ায় ২ উইকেটে ৪৫ রানে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেছিল আফগানিস্তান। তবে দিনের শুরুতেই টাইগার পেসারদের বোলিং তোপের মুখে পড়ে মাত্র ১১৫ রানেই অলআউট হয়ে যায় আফগানরা।
এদিন উইকেটের শুরুটা করেছিলেন আগের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেওয়া পেসার এবাদত হোসেন। দলীয় ৪৮ রানের মাথায় ডানহাতি এই পেসারের অফ-স্ট্যাম্পের ওপর গুডলেংথে থাকা বলে খোঁচায় উইকেটরক্ষক লিটনের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন নাসির জামাল।
এরপর পর পর দুই ওভারে আফসার জাজাই ও বাসির শাহকে ফেরান শরিফুল। বাঁহাতি এই পেসারের রাউন্ড দ্য উইকেট প্রান্ত থেকে করা বলে জাজাই স্লিপে থাকা মেহেদি হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ দেন। ফলে ব্যক্তিগত ৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই উইকেটকিপার।
এরপর তাইজুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৭ রানে ব্যাট কয়রা বাসিরকে ফেরান শরিফুল। এরপর বোলিং আক্রমণে আসেন তাসকিন। তার অফ স্টাম্পের একটু বাইরের লাইন, লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলে খোঁচা দেন রহমত। তাতে উইকেটের পিছনে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে আফগানিস্তান হারিয়ে ফেলে ষষ্ঠ উইকেট।
এরপর করিম জানাতকে বোল্ড করেছেন তাসকিন। ওভার দ্য উইকেট থেকে করা তার বলটি লেংথ থেকে ঢুকে যায় ভেতরের দিকে। করিম সে বলের নাগালই পাননি। যদিও ব্যাকফুটে গিয়ে সময় হারিয়েছেন। বলও প্রত্যাশামতো ওঠেনি। তাসকিন পেয়ে যান তৃতীয় উইকেটের দেখা।
শেষদিকে বাংলাদেশের পেসারদের তোপের মুখে রীতিমতো চোখে সর্ষে ফুল দেখেছনে সফরকারী ব্যাটাররা। মেহেদি হাসান মিরাজের বলে মুমিনুলকে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৫ রানে ফেরেন আমির হামজা। এরপর তাসকিন নিজের চতুর্থ উইকেট তুলে নেন ইয়ামিনকে বিদায় করে। পরে এই পেসারের বলে আহত হয়ে জহির আউট হলে ১১৫ রানে অলআউট হয়ে যায় সফরকারীরা।
বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস সেরা ৪ উইকেট শিকার করেছেন তাসকিন আহমেদ। আর দুই ইনিংসে মিলিয়ে নামের পাশে ৫টি করে উইকেট যোগ করেছেন শরিফুল ইসলাম এবং এবাদত হোসেন।