আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিদেশিদের করুণা লাভের আশায় বিএনপি নেতারা ধারাবাহিকভাবে গুম-খুন নিয়ে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে দলের দপ্তর সম্পাদকের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। গুম ও অপহরণ নিয়ে বিএনপি নেতাদের অসত্য, মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সেতুমন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ বার বার হত্যা-ক্যু-খুন-গুম ও ষড়যন্ত্রের অপরাজনীতির নির্মম শিকার হয়েছে। গুম নিয়ে বিএনপি মিথ্যা বয়ান তৈরির মধ্য দিয়ে সরকারের উপর দোষ চাপিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার অপতৎপরতা চালাচ্ছে। অথচ তাদের গুমের নাটকের নেপথ্যের আখ্যান আজ দেশবাসীর অজানা নয়।
বিএনপি নেতারা গুম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যে বানোয়াট বক্তব্য প্রদান করছে, তা বাস্তবতাবিবর্জিত ও ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশি বন্ধু ও প্রতিনিধিদের করুণা লাভের আশায় বিএনপি নেতারা ধারাবাকিভাবে গুম-খুন নিয়ে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে।
চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিন নিখোঁজ হওয়ার পর তার দায় সরকারের ওপর চাপানো হয়েছিল কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বেই জামাল উদ্দিন নিজ দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা গুমের শিকার হয়েছিল। যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একইভাবে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ নিখোঁজ হওয়ার পর তার দায়ভারও সরকারের উপর চাপানোর অপচেষ্টা চালানো হয়। পরবর্তীতে দেখা যায় তিনি ভারতে আত্মগোপনে ছিলেন। এমনকী বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর গুমের ঘটনায় বিএনপির এক সিনিয়র নেতা তার বক্তব্যে বলেছেন, ইলিয়াস আলীকে বিএনপির লোকজনই গুম করেছে। যা পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে।
জিয়াউর রহমানই এ দেশে গুমের রাজনীতির সূচনা করে বলে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান অসংবিধানিক ও অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে। স্বৈরাচার জিয়ার শাসনামলে ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ বাবুকে রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে গুম করে হত্যা করা হয়। তার মরদেহটাও পরিবারের সদস্যরা খুঁজে পায়নি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, চট্টগ্রামের যুবলীগ নেতা মৌলভী সৈয়দকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। জিয়াউর নিজের অবৈধ ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে তথাকথিত বিদ্রোহের অভিযোগে সেনা ও বিমান বাহিনীর শত শত মুক্তিযোদ্ধা অফিসার ও সহস্রাধিক সৈনিককে হত্যা করেছিল। এমনকী সেসব সেনা অফিসার ও জোয়ানদের অনেকেরই মরদেহ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তাদের পরিবারের সদস্যরা এখনও জানেন না তাদের কোথায় দাফন করা হয়েছে। সেসব ঘটনায় হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোর শেষ চিহ্নটুকু পাওয়ার জন্য তাদের পরিবারের সদস্যরা আজও তীর্থের কাকের ন্যায় অপেক্ষা করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের শিকার সেসব সেনা অফিসার ও জোয়ানদের পরিবারের সদস্যরা সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের দাবি জানিয়ে আসছে। জিয়াউর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট’-এর নামে আওয়ামী লীগের শত শত নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল এবং এই বেআইনি হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দিতে ইনডেমনিটি আইন করা হয়।
বিএনপির নির্দেশে জঙ্গিগোষ্ঠি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর গ্রেনেড হামলা চালায় দাবি করে সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনামলে আওয়ামী লীগের ২৪ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। এমনকী বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের সরাসারি তত্ত্বাবধানে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতাদের হত্যার উদ্দেশে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট হাওয়া ভবনের নির্দেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালিয়ে গণহত্যা সংঘটিত করেছে জঙ্গিগোষ্ঠী।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনামলে আওয়ামী লীগের ২৪ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। এমনকি বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতাদের হত্যার উদ্দেশে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট হাওয়া ভবনের নির্দেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালিয়ে গণহত্যা সংঘটিত করেছে জঙ্গিগোষ্ঠী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ খুন-গুমের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। বরং আওয়ামী লীগই বার বার হত্যা-ক্যু-খুন-গুম ও ষড়যন্ত্রের অপরাজনীতির নির্মম শিকার হয়েছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শেখ হাসিনার সীমাহীন ত্যাগ ও সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।