গাজায় স্থিতিশীলতা এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ফেরাতে ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ড ফিরিয়ে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান। শুক্রবার গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল -জিসিসি ও অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস-আসিয়ান এর যৌথ সম্মেলনে এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি।

গাজার এই পরিস্থিতিকে সৌদি আরব সমর্থন করে না জানিয়ে ক্রাউন প্রিন্স বলেছেন, গাজায় ইসরাইলের চালানো হামলায় আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে এই হামলা বন্ধের আহ্বান জানান তিনি।

মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, গাজায় এই পরিস্থিতির মধ্যেই সবাই বৈঠকে বসলাম। একের পর এক হামলায় সেখানে নিরীহ মানুষ মারা যাচ্ছে। এভাবে নিরীহ মানুষের ওপর হামলা সৌদি আরব কখনোই সমর্থন করে না

তিনি বলেন, এই হামলায় আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হচ্ছে। হামলা বন্ধ করতে হবে। এই সংঘাতে শান্তি আনতে হলে ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ড ফিরিয়ে দিতে হবে।

এদিকে শুক্রবার মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে কথা বলেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এ সময় তিনি, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার বিষয়টি আবারও প্রত্যাখ্যান করেছেন।

সৌদি রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সাথে টেলিফোনে কথা বলার সময় বিন সালমান গাজার পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য এবং সহিংসতা যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তা নিশ্চিত করার জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের প্রচেষ্টা করতে উৎসাহিত করেছেন।

তিনি গাজার উপর অবরোধ তুলে নেওয়া এবং অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে চিকিৎসা ও ত্রাণ সহায়তার অনুমতি দেওয়ার দাবি জানান।

ট্রুডোর অফিসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই নেতা গাজা ও ইসরায়েলের পরিস্থিতি এবং সংঘাতের আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেছেন।

তারা গাজা সংঘাতের মানবিক প্রভাব সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং সমস্ত পক্ষের বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মানবিক অ্যাক্সেস নিশ্চিত করার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছে।

ট্রুডো দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান এবং ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের শান্তি ও নিরাপত্তায় বসবাসের অধিকারের প্রতি কানাডার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার সৌদি আরব সফর করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। তার সঙ্গে বৈঠকে সৌদি যুবরাজ বলেন, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েল যেভাবে নির্বিচার বোমা হামলা চালাচ্ছে তা স্পষ্টতই গর্হিত অপরাধ। গাজার বেসামরিক নাগরিকদের নিশানা করে ইসরায়েলের বোমা বর্ষণকে সৌদি আরব পাশবিক হামলা হিসেবে বিবেচনা করছে। একই সঙ্গে গাজায় এসব নিরীহ মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। এরপর ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৪,৩০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন হাজার মানুষ। অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচারে হামলা করছে ইসরায়েল। হাসপাতাল, স্কুল এবং আশ্রয়কেন্দ্রও হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না।

অপরদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১৪০০ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া হামাসের হাতে আটক রয়েছে দুই শতাধিক মানুষকে ইসরায়েল থেকে জিম্মি করেছে। তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক রয়েছে।