ওয়ানডে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। শুক্রবার (১০ নভেম্বর) আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪৪ রানের পুঁজি দাঁড় করায় আফগানরা। জবাবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪৭ দশমিক ৩ ওভারে ৫ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে প্রোটিয়ারা।
এদিন আফগানদের দেওয়া ২৪৫ রানতাড়ায় শুরুটা ভালো করেছিলেন দুই প্রোটিয়া ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও টেম্বা বাভুমা। উদ্বোধনী জুটিতে তারা ৬৪ রান যোগ করেছিলেন। তবে এরপর আফগান-স্পিন প্রোটিয়াদের স্বস্তি দেয়নি। পাওয়ার প্লেতে ৫৪ রান তোলার পরের ওভারেই প্রোটিয়া অধিনায়ক বাভুমাকে (২৩) ক্যাচ বানান স্পিনার মুজিব-উর-রহমান। ১১তম ওভারের সে ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই ১৪তম ওভারে ডি কক আউট। আরেক স্পিনার মোহাম্মদ নবীর বলে ৪১ রান করে এলবিডব্লু হন ডি কক।
মাঝের ওভারে থিতু হয়ে আউট হয়েছেন এইডেন মার্করাম (২৫) ও হেইনরিখ ক্লাসেন (১০)। আফগান স্পিন ত্রয়ীর আরেক সদস্য রশিদ খানের বলে দুজনই আউট হন। এরপর দলটিকে মূলত প্রায় একাই টেনেছেন তিনে নামা রসি ফন ডার ডুসেন। এর মাঝেই দুটি গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন মার্করাম ডেভিড মিলারের সঙ্গে। মার্করামের সঙ্গে ৬০ বলে ৫০ রানের জুটি গড়ার পর মিলারের সঙ্গে আরও ৪৩ রান যোগ করেন ডুসেন।
বিশ্বকাপের আগের ম্যাচগুলোতে এরপরই অর্ডারে দেখা যেত মার্কো ইয়ানসেনকে। আজ তার জায়গায় সুযোগ পাওয়া আরেক অলরাউন্ডার পেহলুকাওকে নিয়ে বাকি পথটা পাড়ি দেন ডুসেন। দুজন মিলে ষষ্ঠ উইকেটে ৬২ বলে অবিচ্ছিন্ন ৬৫ রানের জুটি গড়েন। ডুসেন ৯৫ বলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় অপরাজিত ৭৬ রান করেন। পেহলুকাওর ব্যাট থেকে এসেছে ৩৭ বলে ৩৯ রান। ৪৭তম ওভারে ৬-৪-৬ এর বাউন্ডারিতে জয় নিশ্চিত করেন পেহলুকাও।
এর আগে, ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ধীরস্থির হলেও আস্তে আস্তে রানের গতি বাড়াতে থাকে আফগানরা। ওপেনিং জুটিতে ৪১ রান তুললেও ৪৫ রানের মধ্যেই তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় রশিদ-নবিরা। এরপর অল্প রানের মধ্যেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কাও জেগেছিল। তবে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের নৈপুণ্যে শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে আজমত ও রহমত শাহ মিলে ৪৫ রান যোগ করেন। এরপর ৪৬ বলে ২৬ রানে ফেরেন রহমত। তবে এরপর ক্রিজে নেমে খুব বেশি সময় থিতু হতে পারেননি ইকরাম আলি। তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১২ রান। এরপর মাত্র ২ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মোহাম্মদ নবি।
দুর্দান্ত শুরু করলেও ১৪ রানেই থেমেছেন রশিদ খান। তবে আজমতকে সঙ্গ দিয়ে ৩২ বলে ২৬ রানে দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন নূর আহমেদ।
অষ্টম উইকেট জুটিতে ৪৪ রান যোগ করেন তারা। এরপর ৮ রান করেই সাজঘরে ফেরেন মুজিব।
শেষ পর্যন্ত নাভিনকে সঙ্গে নিয়ে স্কোরবোর্ডে রান যোগ করার লড়াইয়ে ৩ ছক্কা ও ৭ চারে ১০৬ বলে ৯৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন আজমত।
প্রোটিয়াদের হয়ে জেরাল্ড কোয়েটজি চারটি, লুঙ্গি এনগিদি ও কেশভ মহারাজ দুটি করে এবং আন্দিলে ফেহলুকায়োর শিকার এক উইকেট।