শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তিন উইকেটে হারিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া। শিরোপার জন্য এখন তারা লড়বে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে। বৃহস্পতিবার ভারতের কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভার ৪ বলে ২১২ রানে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ব্যাটে নেমে ৪৭ ওভার ২ বলে তিন উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছায় অজিরা।

২১৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত করেন দুই অজি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেড। মাত্র ৬ ওভারেই ৬০ রান তুলে ফেলেন তারা।

এরপরই ঘটে ছন্দপতন। ব্যক্তিগত ২৯ রানে ফেরেন ওয়ার্নার। ফিফটির দলীয় ১০৬ রানে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৬২ রানে ফেরেন ট্রাভিস হেড।

এরপর দলীয় ১৩৩ রানের মাথায় ১৮ রানে ফেরেন লাবুশানে। ৪ রান ব্যবধানে ফেরেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও। এতে কিছুটা বিপাকে পড়ে যায় অজিরা।

এরপর ষষ্ঠ উইকেটে জশ ইংলিসকে নিয়ে দলকে টানেন স্মিথ। দলীয় সংগ্রহে ৩৭ রান যোগ করে এই জুটি। এরপরদলীয় ১৭৪ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় অজিরা।

শেষ দিকে প্রোটিয়াদের থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নেন মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্স। তাদের ২২ রানের জুটি ১৬ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে অজিরা।

এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বড়সড় ধাক্কা খায় প্রোটিয়ারা। অফ ফর্মে থাকা এই ব্যাটার আজ রানের খাতাই খুলতে পারেননি। ভালো করতে পারেননি আরেক ওপেনার কুইন্টন ডি ককও। জশ হ্যাজেলউডকে তুলে মারতে গিয়ে কামিন্সের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ফেরেন মাত্র ৩ রান করে। ওপেনারদের কাছ থেকে দুঃস্বপ্নের শুরু পাওয়ার পর হাল ধরতে পারেননি এইডেন মারক্রাম ও রাসি ফন ডার ডুসেন।

ইনিংসের ১১তম ওভারে স্টার্কের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি মারক্রামের ব্যাটের কানায় লেগে সোজা আশ্রয় নেয় পয়েন্টে থাকা ডেভিড ওয়ার্নারের হাতে। ২০ বল খেলে দুই চারে মাত্র ১০ রান করেন প্রোটিয়া সহ-অধিনায়ক। পরের ওভারেই হ্যাজেলউডের বলে স্লিপে স্টিভেন স্মিথের হাতে ধরা পড়েন ডুসেন। ৩১ বলে ৬ রান করেন তিনি।

মাত্র ২৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর হাইনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলারের ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করে প্রোটিয়ারা। ইনিংসের ১৪তম ওভারে বৃষ্টির আঘাতে কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে খেলা। কাভার সরানোর পর লড়াই চালিয়ে যান ক্লাসেন-মিলার।

থিতু হয়ে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন ক্লাসেন। কিন্তু ট্রাভিস হেডের জোড়া আঘাতে আবারও ম্যাচে ফেরে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ক্লাসেনকে (৪৭) বোল্ড করে ৯৫ রানের জুটি ভাঙেন হেড। পরের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মার্কো ইয়ানসেন।

বাকিটা পথ একাই লড়াই করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুই শ পার করান মিলার। একইসঙ্গে ১১৫তম বলে কামিন্সকে ছক্কা মেরে স্পর্শ করেন ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। কিন্তু পরের বলেই হেডকে ক্যাচ দিয়ে থেমে যেতে হয় তাকে। তার ১০১ রানের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৮ চার ও ৫ ছক্কায়।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে কামিন্স ও স্টার্ক নেন সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট। এছাড়া দুটি করে শিকার হ্যাজেলউড ও হেডের।