ফুটবল বিশ্বকাপের বাছাইয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ লেবাননের সাথে ১-১ গোল ব্যবধানে সমতায় থেকে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ দল। মঙ্গলবার রাজধানীর বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় পুরো ৯০ মিনিট লড়ে ১-১ গোলে ড্র করেছে মোরসালিনরা। জয় না পেলেও এই এক পয়েন্টই বাংলাদেশের জন্য বড় প্রাপ্তি।
কিংস অ্যারেনায় ম্যাচের শুরুতেই লেবানন আক্রমণের ধার বাড়িয়ে খেলতে থাকে। বাংলাদেশের হয়ে আজ একাদশে সুযোগ পেয়েই একাধিক গোল করার সুযোগ মিস করেছেন মোরসালিন। বাংলাদেশের ডিফেন্স লেবাননের ফরোয়ার্ডের সঙ্গে সমানে সমানে লড়েছেন।
অপরদিকে গোলরক্ষক মিতুল মারমাও একাধিক সেভ করেছেন। তবে প্রথমার্ধের শেষ দিকে প্রথম গোলের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলেন শেখ মোরসালিন। তবে ফিনিশিং দুর্বলতায় তা গোলে পরিণত করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত তিন মিনিটে প্রথমার্ধে কেউই গোলের দেখা পায়নি। ফলে গোলশূন্য ড্র নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।
মিতুল মারমা প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে ব্যথা অনুভব করেন। মেডিক্যাল টিম মাঠে কয়েক মিনিট তাকে প্রাথমিক চিকিৎসাও দেয়। প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ের তিন মিনিট মাঠে থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোলরক্ষক পরিবর্তন করেন কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা।
গোলশূন্য প্রথমোর্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় দুই দলই। শুরুতেই নিজেদের গোলরক্ষক মিতুল মারমাকে বদলি করে মেহেদি হাসান শ্রাবণকে নামাতে হয়েছে বাংলাদেশের কোচ কাবরেরাকে। প্রথমার্ধেই অসুস্থ অনুভব করছিলেন তিনি। জাতীয় দলের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে ভুল প্রায় করেই বসেছিলেন শ্রাবণ। ৪৮ মিনিটে হাসান মাতুকের ফ্রি-কিকে সামনে এগিয়ে এসে ফিস্ট করার চেষ্টা ছিল বাংলাদেশ গোলরক্ষকের। ফাঁকা পোস্টে কাসেম আল জেইনের হেডে বল অল্পের জন্য জড়ায়নি জালে।
৫২ মিনিটে মাঠে অনাহুত দর্শকের হানা। বাংলাদেশের পতাকা কাঁধে চাপিয়ে সোহেল রানাকে জড়িয়ে ধরলেন এক দর্শক। পরে নিরাপত্তাকর্মীরা এসে সরান তাকে। এই অর্ধে বাংলাদেশের প্রথম আক্রমণ ৫৯ মিনিটে। প্রতি আক্রমণে লেবাননের বক্সে বিশ্বনাথের জোরের সঙ্গে নেওয়া শট পায়ে গলাতে পারেননি মোরসালিন।
পুরো ম্যাচে দাপুটে খেলা বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ ছুটে যায় ৬৭ মিনিটে। গোলরক্ষক শ্রাবণের মস্ত ভুলে এগিয়ে যায় লেবানন। বদলি হিসেবে মাঠে এসে চার মিনিটের মধ্যে লেবাননকে এগিয়ে নেন মাজেদ ওসমান। ডান দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা লেবাননের দু’টি প্রচেষ্টা রক্ষণে বাধা পেলে শ্রাবণ এগিয়ে এসে বল আয়ত্তে নিতে গিয়েছিলেন। বিশ্বনাথ হেডে বিপদমুক্ত করতে যান, তাই বলটা আয়ত্তে নিতে পারেননি শ্রাবণ। উল্টো তার বুকে লেগে বল চলে যায় ফাঁকায় দাঁড়ানো মাজেদের কাছে। ঠাণ্ডা মাথায় ফাঁকা পোস্টে বল জমা করেন এই বদলি স্ট্রাইকার।
পিছিয়ে পড়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যে চোখ ধাঁধানো গোলে বাংলাদেশকে সমতায় ফেরান মোরসালিন। মাঝমাঠ থেকে লেবাননের এক খেলোয়াড়ের ব্যাকপাসে বল পান মোরসালিন। একাই চলে যান বক্সের সামনে। ডি-বক্সে সামনের জায়গাটা মোরসালিনের বেশ পছন্দের, সেখান থেকেই নিলেন ডান পায়ে বুলেট গতির এক শট। বাঁকানো শটে বল লেবানন গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে জড়ালো বাঁ পোস্ট দিয়ে জালে। মাত্র ৯ ম্যাচে চতুর্থ আন্তর্জাতিক গোল হয়ে গেল মোরসালিনের। গোলের পর উদ্দাম উদযাপনে দেখলেন হলুদ কার্ডও।
৮৯ মিনিটে দারুণ এক গোলের সুযোগ মিস করেন মোরসালিন। রফিকের ক্রস পেয়ে যান ফাঁকায় থাকা মোরসালিন। গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি তিনি। তার শট সাইড নেট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। শেষ দিকে বাংলাদেশের রক্ষণে চাপ সৃষ্টি করলেও গোলের দেখা মেলেনি লেবাননের। এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়লো বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে কিংস অ্যারেনায় অপরাজিত থাকার রেকর্ড আরও লম্বা হলো বাংলাদেশের।