অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিল জাতীয় পার্টি (জাপা)। বুধবার বিকেলে রাজধানীর বনানীতে পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এই ঘোষণা দেন।
মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেছেন, জাতীয় সাংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আমরা আমাদের সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছি; কিন্তু আমরা নির্বাচনে যাব কী যাব না, তা ঘোষণা করা হয়নি। আমরা সব সময় বলেছি, আমরা একটি আস্থার পরিবেশ চাই। ভোটাররা যেন ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সব মাধ্যম থেকে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি, নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে। ভোটাররা নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট মহল আমাদের আশ্বস্ত করেছে। তাদের প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস রেখে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের এমপি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পার্টির চেয়ারম্যানের নির্দেশে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেবে- আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা করছি।
এ সময় সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, জাতীয় পার্টি কোনো জোটে যাবে না, তিনশ আসনেই নির্বাচন করবে জাতীয় পার্টি। দুপুর পর্যন্ত আমাদের প্রায় ১৪০০ মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে। প্রায় প্রত্যেক আসনেই একাধিক আগ্রহী প্রার্থী মনোনয়ন ফরম গ্রহণ করেছেন। আমরা আমাদের ঘোষণা অনুযায়ী এককভাবেই নির্বাচন করব। আমরা কারও সঙ্গে আসন সমঝোতায় যাব না। জাতীয় পার্টি স্বচ্ছ রাজনীতি করে, জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অপবাদ নেই। গত ৩৩ বছর দেশের মানুষ আমাদের শান্তিপ্রিয় রাজনীতি পছন্দ করেছে। আমরা আশা করছি, তিনশ আসনেই আমরা শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব।
এর আগে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে জাতীয় পার্টি জানিয়ে আসছে, তারা আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে কি না এ ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। নির্বাচনের পরিবেশ নেই বলেও দাবি করা হচ্ছিল দলটির পক্ষ থেকে। যদিও জাতীয় পার্টি তাদের দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি ইতোমধ্যে শুরু করেছে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বিএনপি বর্জন করায় প্রথমবার জাতীয় পার্টি সংসদের বিরোধী দলের মর্যাদা পায়। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি এলেও জাতীয় পার্টি সংসদের বিরোধী দলের মর্যাদা ধরে রাখে। যদিও সরকারি দল আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয় পার্টি এই অবস্থান ধরে রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে অবশ্য জাতীয় পার্টিও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক ছিল।
এদিকে জাতীয় পার্টি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেও বিএনপিসহ তাদের সমমনা দলগুলো নির্বাচনে না যাওয়ার ব্যাপারে অনড় অবস্থানে রয়েছে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দফায় দফায় হরতাল ও অবরোধের কর্মসূচি দিচ্ছে দলটি।